যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কার মধ্যেই গাজায় চলছে ইসরায়েলি হামলা
গাজা উপত্যকায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েল। গত বছরের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া এই যুদ্ধে ইতোমধ্যে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নিয়ন্ত্রণাধীন উপকূলীয় উপত্যকাটি ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য অঞ্চলে এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কার মধ্যে সেখানকার অধিবাসীরা দিন পার করছে চরম মানবিক সংকটের মধ্য দিয়ে।
এদিকে, যুদ্ধ চলতে থাকলেও গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য ওষুধ সরবরাহ করার লক্ষ্যে ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। কাতার ও ফরাসি কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি করা হয়।
অন্যদিকে, হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন এলাকায় ইরান ও তার মিত্রদের ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে হামলার বেগ বেড়ে যাওয়ায় আঞ্চলিক সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাকে কোনোভাবেই এড়ানো যাচ্ছে না। খবর এএফপির।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, এই যুদ্ধে ইসরায়েলি হামলায় গাজার ২৪ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৮৫ শতাংশ লোকজন বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এসব লোকজনের বেশির ভাগেরই ঠাঁই হয়েছে আশ্রয় শিবিরে আর এখন তারা খাবার, পানি, জ্বালানি ও চিকিৎসা নিতে রীতিমতো সংগ্রাম করছে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে হামাসের নজীরবিহীন হামলায় এক হাজার ১৪০ জন নিহত হয়, যাদের বেশির ভাগই ছিল বেসামরিক লোক। এ ছাড়া হামাস ২৫০ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। এরপর হামাস-ইসরায়েল বন্দি বিনিময় হলেও এখনও ১৩২ জন ইসরায়েলি হামাসের হাতে বন্দি রয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে ইহুদি রাষ্ট্রটি।
হামাসের হামলার পাল্টা জবাবে গাজায় নির্বিচার বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ২৮৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, গাজায় প্রচণ্ড শীতের মধ্যে লোকজন অবর্ণনীয় কষ্টের মধ্যে রয়েছে। উপত্যকাটির দক্ষিণে রাফা সীমান্তে অস্থায়ী তাঁবুতে বসবাসকারী লোকজন হিমশীতল রাতে ক্ষতিকর প্লাস্টিক পুড়িয়ে শীত থেকে বাঁচার চেষ্টা করছে। জাবালিয়া শরণার্থী শিবির থেকে রাফায় পালিয়ে আসা ২৯ বছরের আব্দুল করিম মোহাম্মদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমি প্রতিদিন প্রার্থনা করি যেন আমি শহীদ হয়ে যাই। এই জীবনের চেয়ে মরে যাওয়াও অনেক ভালো।’
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার তারা ইয়েমেনের হুতি লক্ষ্যবস্তুতে নতুন করে হামলা চালিয়েছে। লোহিত সাগরে পণ্যবাহী জাহাজে হুতিদের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর যুক্তরাষ্ট্র এই হামলা চালায়। এ ছাড়া মার্কিন সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তারা আরব সাগর থেকে হুতিদের জন্য পাঠানো ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের একটি চালান আটক করেছে।