ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র গঠনে পাল্টাপাল্টি অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল
ইসরায়েলের জন্য দীর্ঘ মেয়াদি নিরাপত্তার গ্যারান্টি হিসেবে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ধারণাতে বিশ্বাস করে যুক্তরাষ্ট্র, ওয়াশিংটনের এমন মন্তব্যের পর ইসরায়েলের সঙ্গে দেশটির বিভেদ সামনে চলে এসেছে। গাজায় হামাস-ইসরায়েলের যুদ্ধ শেষ হয়ে যাওয়ার পর উপত্যকাটির ভাগ্যে কী ঘটবে, এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে এ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে বেশ জোরেসোরে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, জর্ডান নদীর পশ্চিম তীরের পুরো ভূখণ্ডে তার দেশের নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ অবশ্যই থাকতে হবে। জনতার উদ্দেশে এক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এটি জরুরি পরিস্থিতি। একইসঙ্গে ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বের ধারণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
এদিকে নেতানিয়াহুর মন্তব্যের পর যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, ওয়াশিংটন ও ইসরায়েল অবশ্যই এটাকে ভিন্নভাবে দেখবে।
একদিন আগে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে এগোতে পুনরায় তার আহ্বান তুলে ধরেন।
ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘আপনার অনুপস্থিতিই বলে দেয়, আপনি সত্যিকারের নিরাপত্তা পেতে যাচ্ছেন না।’
কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ইসরায়েলের একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার না বলার ক্ষমতা থাকতে হবে, এমনকি আমাদের সবচেয়ে ভালো বন্ধুর প্রতিও। না বলতে হবে যখন অবশ্য প্রয়োজন হবে তখন, আর হ্যাঁ বলতে হবে যদি সম্ভব হয়।’
গত সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্য সফরের সময় অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন, সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলো গাজাকে নতুন করে গড়ে তুলতে সহায়তার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে ফিলিস্তিনি শাসন ব্যবস্থায় সহায়তারও আশ্বাস দিয়েছে তারা। তবে তা একটি শর্তের বিনিময়ে, আর সেটি হলো ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথকে পরিষ্কার করে দেবে ইসরায়েল।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুপক্ষের সহযোগিতার বিষয়ে উৎসাহ দিয়ে বলেন, একটি ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ পরিচালিত হতে পারে তখনই যখন ইসরায়েল তাদের সাহায্য ও সমর্থন দেবে, সক্রিয়ভাবে বিরোধিতা করবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলারের মতে, ইসরায়েলকে সামনের মাসগুলোতে আরও ভীষণ কঠিন কিছু প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসরায়েলকে যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তার ধারাবাহিকতায় নতুন করে একটি ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি হয়েছে, যেটিকে তারা কাজে লাগাতে পারে।’
তবে ভীষণ জটিল সম্পর্ক নিয়ে চলা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সরাসরি কোনো আলোচনায় অংশ নেননি।