মিয়ানমারের প্রায় ৩০০ সৈন্য পালিয়েছে ভারতে
মিয়ানমারে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র লড়াই চালিয়ে যাওয়া বিদ্রোহীরা অগ্রসর হতে থাকায় দেশটির প্রায় ৩০০ সৈন্য সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতে পালিয়ে গেছে। ভারতীয় আধা সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপিকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
ভারতের সঙ্গে সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমারে গত নভেম্বরে অস্ত্রবিরতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবার পর বিদ্রোহী আরাকান আর্মি (এএ) নিরাপত্তা বাহিনীর বিভিন্ন অবস্থানে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালে সামরিক বাহিনী এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশটির ক্ষমতায় আসে।
চলতি সপ্তাহে বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান আর্মি জানায়, ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সঙ্গে থাকা সীমান্ত এলাকায় হামলা চালিয়ে তারা পালেতওয়া শহর দখল কেরে নিয়েছে তারা। পাশাপাশি তাদের নিয়ন্ত্রণে এসেছে ছয়টি সামরিক ঘাঁটি। আর এই সীমান্ত দিয়েই গত বুধবার মিয়ানমারের সৈন্যরা ভারতে প্রবেশ করেছে বলে জানানো হলো।
ভারতের আধা সামরিক বাহিনীর আসাম এলাকায় দায়িত্বরত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা জানান, মোট ২৭৬ জন সৈন্য অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে ভারতের বন্দুকবাঙ্কসরা নামের ওই গ্রামে পৌঁছে।
আসাম রাইফেলসের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা তাদেরকে আমাদের ক্যাম্পে আশ্রয় দিয়েছি।’ এ ছাড়া তাদের সব ধরনের সহায়তাও দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ওই কর্মকর্তা জানান, তার ইউনিট ওই সৈন্যদের বায়োমেট্রিক ডাটা সংগ্রহ করছে এবং তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে নয়াদিল্লিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চেয়েছে।
গত নভেম্বরে অস্ত্রবিরতির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর বিদ্রোহীদের হামলার মুখে মিয়ানমারের কয়েকশ সৈন্য ভারতে পালিয়ে গেছে বলে দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে। পালিয়ে আসা এই সৈন্যদের দেশে ফিরিয়ে নিতে মিজোরাম রাজ্যের রাজধানী আইজাওলে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর দুটি বিমান পৌঁছেছে বলে জানা গেছে।
গত অক্টোবরে আরাকান আর্মি এবং আরও দুটি জাতিগত সংখালঘু সম্প্রদায়ের সশস্ত্র সংগঠনের জোট মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান রাজ্যের চীনের সঙ্গে লাগোয়া সীমান্তে সরকারবিরোধী অভিযানে বেশকিছু শহর দখল করে নেয়, যার মধ্যে কয়েকটি বাণিজ্যিক এলাকাও রয়েছে।
গত সপ্তাহে বিদ্রোহীদের জোট চীনের মধ্যস্থতায় শান রাজ্যে সরকারের সঙ্গে অস্ত্রবিরতিতে পৌঁছে। তবে ভারত সীমান্তে এই অস্ত্রবিরতি প্রয়োগ করা হচ্ছে না। এসব এলাকায় বিদ্রোহীদের সঙ্গে জান্তা সরকারের সামরিক বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে।