ভোটের দিনে পাকিস্তানে মোবাইল পরিষেবা বন্ধ
পাকিস্তানে ভোটের দিনে মোবাইল ফোন পরিষেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। দেশটির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলাতে আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ভোটের আগের দিন পাকিস্তানের বালুচিস্তানে পরপর দুটি বিস্ফোরণ হয়। এতে মারা গেছেন ২৮ জন। করাচিতে গ্রেনেড আক্রমণেও একজনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে। তাই সাময়িকভাবে মোবাইল ফোন পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদীদের তৎপরতা বেড়ে গেছে। মানুষের প্রাণহানি হচ্ছে। তাই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ও বিপদের মোকাবিলা করতে এই ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে।
ইমরান খানের দলের নেতা তৈমুর সেলিম খান ঝাগরা তার এক্স প্রোফাইলে বলেছেন, ‘মোবাইল পরিষেবা বন্ধ করা খুবই লজ্জাজনক সিদ্ধান্ত। এই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। মোবাইল পরিষেবা অবিলম্বে চালু করতে হবে।’
সাবেক পিপিপি সেনেটর মুস্তাফা নওয়াজ খোখার বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্রে রিগিং (কারচুপি) নিশ্চিত করতেই মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।’
ইসলামাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা অনেকটাই বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীদের সতর্ক করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালেই সব ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তারক্ষীরা পৌঁছে গেছেন। ভোটকর্মীরাও পৌঁছেছেন। সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
ইসলামাবাদ পুলিসের সাড়ে ছয় হাজার কর্মী ছাড়াও দেড় হাজার রেঞ্জার্স ও সেনা কর্মীরা রাজধানীতে ভোটের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারও কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এ ছাড়া আফগানিস্তান ও ইরানের সঙ্গে সীমান্ত পারাপারের জায়গাগুলো আজ বৃহস্পতিবার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভোটে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়েছেন। ইমরান এখন জেলে আছেন। সেখান থেকেই তিনি ভোট দেন।
ইমরান ছাড়াও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মাহমুদ কুরেশি, পাকিস্তান পাঞ্জাবের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী চৌধুরী পারভেজ ইলাহি, আওয়ামি মুসলিম লিগের প্রধান শেখ রশিদ ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী ফায়াদ চৌধুরীও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেন। তবে ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবি ভোটে অংশ নিতে পারেননি। কারণ, পোস্টাল ব্যালট প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পাকিস্তানের জাতীয় ও আঞ্চলিক নির্বাচনে সবমিলিয়ে ১৭ হাজার ৮১৬ জন প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে জাতীয় নির্বাচনে পাঁচ হাজার ১২১ জন ও আঞ্চলিক নির্বাচনে ১২ হাজার ৬৯৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরমধ্যে ১১ হাজার ১৭৪ জন পুরুষ ও ৬০৭ জন নারী।