পাকিস্তানে ভোটগ্রহণ শেষ, চলছে গণনা
পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনে আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে চলে বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে ভোটগ্রহণ। এরপরও কয়েকটি কেন্দ্রে ভোটাররা নির্ধারিত সময়ের আগে উপস্থিত হলেও ওই সময়ে ভোটগ্রহণ শেষ না হওয়ায় দেশটির নির্বাচন কমিশন আরও দুই ঘণ্টা সময় বাড়ায়। সেই সময়ও শেষ হয়েছে। এখন চলছে গণনা।
ভোট চলাকালে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন হামলা ও সংঘাতে ঘটেছে হতাহতের ঘটনা। ভোট শুরু আগেও এমন শঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন অনেক প্রার্থী। একইসঙ্গে তারা বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোট কারচুপি হতে পারে বলেও অভিযোগ করেছিলেন। খবর এএফপি ও আল-জাজিরার।
ফরাসি গণমাধ্যম এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে মোট ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ৮০ লাখ। এদের প্রায় অর্ধেকের বয়স ৩৫ বছরের কম।
তবে, সকাল থেকে কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি আশানরূপ ছিল না বলে দাবি করেছে বিভিন্ন মাধ্যম। অন্যদিকে, এমন একটি দিনে সারা দেশে বন্ধ হয়ে যায় মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক। আর ভোট চলাকালে সারা দেশে কমপক্ষে সাতজন মারা যায়।
নিজস্ব কর্মীদের বরাতে এএফফি বলছে, ভোটগ্রহণের সময় শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কেন্দ্রের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে, এর আগেই যারা ভোটকেন্দ্রের প্রাঙ্গণে হাজির হয়েছিলেন, তাদের ভোট দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন সময় শেষ হওয়ার আগেই একটি বিবৃতিতে এমন নির্দেশনা দিয়ে বলেছিল, ‘নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও ভোট কেন্দ্রের প্রাঙ্গণ বা প্রান্তরে আগে উপস্থিত হয়েছে এমন ভোটারদের ভোট দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’
আল-জাজিরার লাইভ আপডেটে বলা হয়েছে, বেশ কিছু কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ দুই ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে।
এই নির্বাচনে পিটিআইয়ের নির্বাচনি প্রতীক (ক্রিকেট ব্যাট) বাতিল করা হয়। পাশাপাশি ব্যালট পেপার থেকেও তাদের প্রতীক সরিয়ে ফেলা হয়। দলটির নেতাদের বাধ্য করা হয় স্বতন্ত্রভাবে দাঁড়াতে। এছাড়া পিটিআই প্রধান সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে রাষ্ট্রদ্রোহ, দুর্নীতি ও অবৈধভাবে বিয়ে করার জন্য দীর্ঘ মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পিএমএল-এন নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন না পেলেও দলটির প্রধান নওয়াজ শরীফ এই নির্বাচনের পর পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) সঙ্গে কোয়ালিশন করে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে আছেন। বিলাওয়াল ভুট্টো ও আসিফ আলি জারদারির নেতৃত্বাধীন পিপিপি পারিবারিক রাজনীতির আরেকটি অনন্য উদাহরণ। তবে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত এই দেশটির অর্থনীতি এখন ভঙ্গুরপ্রায়। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, উত্থান-পতনের রাজনীতিতে জর্জরিত দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে নিস্পৃহ ভাব। তবে, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) অধিকাংশ আসন পাবে বলে মনে করছেন তারা।