ভারতে বহুবিবাহ নিষিদ্ধে বিভক্তি বাড়ছে মুসলিম নারীদের
বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করে আইন কার্যকর হওয়ার কারণে গত বুধবার ভারতের ছোট রাজ্য উত্তরাখণ্ডে স্বস্তিপ্রকাশ করেছেন শায়রা বানু। তার স্বস্তি একারণে যে তার নিজেরটাসহ বছরের পর বছর ধরে ঝুলতে থাকা মামলাগুলো সুপ্রিম কোর্টে চূড়ান্ত পরিণতি পেতে যাচ্ছে।
শায়রা বানু বলেন, ‘আমি এখন বলতে পারি বিয়ে ও বিচ্ছেদ সংক্রান্ত অনেক পুরনো ইসলামি আইনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমি জয়ী হয়েছি।’ শায়রা বানুর স্বামী আরও দুটি বিয়ে করেছিলেন এবং তাকে তিনবার ‘তালাক’ শব্দ উচ্চারণ করে দাম্পত্য সম্পর্কের ইতি টেনেছিলেন। তিনি বলেন, ‘ইসলামে পুরুষদের দুই বা তার বেশি বিয়ে করার বিষয়ে যে অনুমোদন দেয় তার সমাপ্তি প্রয়োজন।’
তবে নতুন আইনে উচ্ছ্বসিত হচ্ছেন না সাদাফ জাফর। এই আইনে মুসলিম পুরুষদের একাধিক বিয়েকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং তাৎক্ষণিক তালাকের বিষয়টিকেও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। তার চেয়ে তিনি আদালতে নিজের মামলার বিষয়টিকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। কেননা তার স্বামী তার অনুমতি না নিয়ে আরেক নারীকে বিয়ে করেছেন।
নিজের দুই সন্তানের ভরণপোষণ চেয়ে মামলা করা সাদাফ জাফর বলেন, ‘বহুবিবাহ ইসলামে অনুমোদিত তবে তা করতে হবে কঠোর নিয়ম-নীতি মেনে। কিন্তু এই নিয়মের অপব্যবহার করা হচ্ছে। আমি ইসলামি পণ্ডিতদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করিনি। তবে আশা করি ভারতের আদালতে ন্যায়বিচার পাওয়া যাবে।’
ভারতের উত্তরাখণ্ডে ইউনিফর্ম সিভিল কোড প্রণয়নের কারণে দেশটির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের মধ্যে শুরু হয়েছে বিভক্তি। এমনকি এই বিভক্তি বহুবিবাহের কারণে জীবনের মোর ঘুরে যাওয়া নারীদের ভেতরও রয়েছে।
শায়রা বানু নতুন আইনের ধারাকে শরিয়া আইনের ওপর ধর্মনিরপেক্ষতার সূক্ষ্ম দাবি হিসেবে উদযাপন করলেও সাদাফ জাফরের মতো মুসলিম রাজনীতিক ও পণ্ডিতরা এটিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির অবাঞ্ছিত পদক্ষেপ হিসেবে মনে করছেন।
উত্তরাখণ্ডে এই আইন কার্যকর হওয়ার কারণে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষে এখন অন্যান্য রাজ্যে মামলা করার সুযোগ তৈরি করে দেবে। তবে এতে ২০ কোটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশটিতে সংখ্যালঘু মুসলিম নেতাদের ক্ষোভের সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।