কাল মুক্তি পাচ্ছেন সাবেক থাই প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা
স্বেচ্ছানির্বাসন শেষে দেশে ফিরে জেলে যাওয়া থাইল্যান্ডের সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা মুক্তি পাচ্ছেন আগামীকাল রোববার। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শ্রেত্থা থাভিসিন আজ শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর এএফপির।
বিতর্কিত ধনকুবের ও থাইল্যান্ডের দুবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রা ২০০৬ সালে এক সামরিক অভ্যত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন। ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির দায়ে পরে তার আট বছরের জেলও হয়। তবে ১৫ বছর স্বেচ্ছানির্বাসনে থেকে গত বছরের আগস্ট মাসে দেশে ফেরার পর গ্রেপ্তার হন তিনি। নেওয়া হয় জেলে। এর পরপরই থাইল্যান্ডের রাজা মাহা ভাজিরালঙ্কর্ন তার শাস্তি কমিয়ে এক বছরে নামিয়ে আনেন।
এ বিষয়ে আজ শনিবার থাই প্রধানমন্ত্রী শ্রেত্থা থাভিসিন বলেন, ‘আইনের ধারা মেনে আগামীকাল (১৮ ফেব্রুয়ারি) মুক্তি পেতে যাচ্ছেন সিনাওয়াত্রা।’
এর আগে থাইল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী বলেছিলেন, ৭৪ বছর বয়সী থাকসিন সিনাওয়াত্রার নামসহ শাস্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে মুক্তি পেতে যাওয়া ৯৩০ জন বন্দির তালিকায় রয়েছে। তিনি জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্যগত জটিলতার কারণে ৭০ বছরের ঊর্ধ্বের যে গ্রুপটিকে মুক্ত করা হচ্ছে, তার মধ্যে সিনাওয়াত্রা রয়েছেন।
থাইল্যান্ডের গণমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়, থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে আগামীকাল ভোরে মুক্ত করা হবে। তবে শ্রেত্থা থাভিসিন বলেছেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানেন না তিনি।
থাকসিন সিনাওয়াত্রা দেশে ফেরার পর কাকতালীয়ভাবে তার পিউ থাই পার্টি সামরিক ধারার সমর্থক দলগুলোর সঙ্গে মোর্চা গঠনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। তবে থাকসিনকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খারাপ স্বাস্থ্যের জন্য কারা কর্তৃপক্ষ তাকে পুলিশ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। আর এর মাধ্যমে সিনাওয়াত্রার সঙ্গে শাসকদলের সমঝোতার গুজব ছড়িয়ে পড়ে দেশটিতে।
স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানায়, হাসপাতালে ভর্তির সময় উচ্চ রক্তচাপ ও বুকের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তার পরিবার জানায়, পরের মাসগুলোতে তার দুটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছে।
থাকসিন সিনাওয়াত্রার মুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি গণমাধ্যমগুলো। তবে মুক্তি পেলেও তিনি সার্বক্ষণিক নজরদারিতে থাকবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পিউ থাই পার্টির প্রধান ও থাকসিনের মেয়ে পায়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রা মুক্তির এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এটি তার (থাকসিন) বাকি জীবন বিশ্রাম নিয়ে সুখে কাটানোর সময়।’
থাইল্যান্ডের টেলিকম টাইকুন হিসেবে পরিচিত সিনাওয়াত্রাকে আধুনিক থাই ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি হিসেবে মনে করা হয়। তবে, তার বিরুদ্ধে বিভাজন সৃষ্টির অভিযোগও রয়েছে।