গাজার রাফাহ শহরে স্থল অভিযানের সময়সীমা বেঁধে দিল ইসরায়েল
ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার সদস্য বেনি গান্টজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, হামাস যদি আগামী ১০ মার্চের মধ্যে সব ইসরায়েলি পণবন্দীকে মুক্তি না দেয় তবে গাজার উপত্যকার রাফাহ শহরে স্থল অভিযান শুরু করবে তারা।
এই হুঁশিয়ারির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ইসরায়েল জানালো কখন তারা জনাকীর্ণ রাফাহ শহরে সৈন্য প্রবেশ করাতে চায়। খবর বিবিসির।
প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি সহায়সম্বল ছেড়ে এই শহরে আশ্রয় নিয়েছে। তাই সেখানে ইসরায়েলের এই ধরনের হামলার বিরোধীতা করে আসছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। এর আগে জাতিসংঘের জনস্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছিল, ইসরায়েলি হামলায় গাজার একটি প্রধান হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে রাফাহর উত্তরে নাসের হাসপাতালে তাদের প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী নাসের হাসপাতালে প্রবেশ করে এই অজুহাতে যে, সেখানে হামাসের হাতে আটক বেশ কয়েকজন ইসরায়েলি পণবন্দী রয়েছে।
এদিকে, গতকাল রোববার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গান্টজ বলেন, ‘বিশ্বকে অবশ্যই জানতে হবে. হামাস নেতাদের অবশ্যই জানতে হবে- রমজান শেষে পণবন্দীরা যদি ফিরে না আসে তবে যুদ্ধ সবখানে ছড়িয়ে পড়বে, এমনকি রাফাহ শহরেও।’
গান্টজ আরও বলেন, ইসরায়েলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। বেসামরিক লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে কীভাবে তাদের সরিয়ে নেওয়া যায় সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরীয় অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে।
ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভা গঠন করা হয়েছে দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে। গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলার পরপরই তা গঠন করা হয়। ওই হামলায় হামাস এক হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নাগরিককে হত্যা করে ও ২৩৫ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। ইসরায়েল দাবি করে আসছে হামাসের হাতে এখনো ১৩০ জন পণবন্দী আটক রয়েছে।
এদিকে, মিশরসহ বেশ কয়েকটি আরব রাষ্ট্র বারবার হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছে এই বলে যে, রাফাহ শহরে ইসরায়েল হামলা করলে অনেক ফিলিস্তিনি মিশরে চলে যেতে বাধ্য হবে। এই অবস্থাকে অগ্রহণযোগ্য বলছে দেশগুলো। সৌদি আরব বলেছে রাফাহ আক্রান্ত হলে সে ঘটনা ‘মারাত্মক প্রতিক্রিয়া’ তৈরি করবে।
হামাসের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত ২৮ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে যাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৬৮ হাজারেরও বেশি সাধারণ মানুষ। গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মারা গেছে ১২৭ জন ফিলিস্তিনি আর আহত হয়েছে ২০৫ জন।