পদত্যাগ করলেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী
পদত্যাগ করেছেন ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ। আজ সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তার এই পদত্যাগের মধ্য দিয়ে কার্যত পুরো মন্ত্রিসভার পতন ঘটল। খবর সিএনএন ও আলজাজিরা।
পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ শাতায়েহ বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট (মাহমুদ আব্বাস) বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসন এবং পশ্চিম তীর-জেরুজালেমে সহিংসতা বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমি এ পদক্ষেপ নিয়েছি।’
সংবাদ সম্মেলনে শাতায়েহ বলেন, ‘গাজা ভূখণ্ডের পরিস্থিতি এখন আর আগের মতো নেই; নতুন বাস্তবতা সেখানে সৃষ্টি হয়েছে। সেই বাস্তবতায় ফিলিস্তিনের অখণ্ডতা ও ঐক্য ধরে রখাতে হলে প্রয়োজন নতুন সরকার, নতুন রাজনীতি। আমাদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং এবং এমন একটি সরকারকে ক্ষমতায় বসানো, যে সরকার পুরো ফিলিস্তিনের ঐক্য দৃঢ় করতে পারবে। আমার পদত্যাগের মূল কারণ এটাই।’
পশ্চিম তীর, গাজা ও পূর্ব জেরুজালেম— তিন ভূখণ্ডের সমন্বয়ে গঠিত ফিলিস্তিন। এই তিন অঞ্চলই একসময় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী রাজনৈতিক দল ফাতাহ এবং অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোর জোট প্যালেস্টাইন অথরিটির (পিএ) অধীনে ছিল। কিন্তু ২০০৫ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ চলে যায় স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হাতে।
তারপর থেকে ফিলিস্তিনে দুটি সরকার ক্রিয়াশীল— পিএ ও হামাস। পশ্চিম তীর ও জেরুজালেম এখনও পিএ’র অধীনে রয়েছে, আর গত ১৯ বছর ধরে গাজা নিয়ন্ত্রণ করছে হামাস।
১৯৫৮ সালে পশ্চিম তীরের নাবলুস জেলার তেল শহরে জন্ম নেওয়া শাতায়েহ ব্যবসায় প্রশাসন এবং অর্থনীতে উচ্চতর ডিগ্রিধারী। যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্স থেকে ১৯৮১ সালে অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর উচ্চতর ডিগ্রিও নিয়েছেন তিনি।
পশ্চিম তীরের বিরজেইত বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্যে দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। তারপর ১৯৯৫ সাল থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনের নির্বাচন কমিশনের সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন শাতায়েহ। ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনের সরকারের কর্মসংস্থা ও আবাসনমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৯ সালে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী হন শাতায়েহ।