গাজায় বেড়েছে যুদ্ধের তীব্রতা, লড়াই থামাতে কায়রোতে আলোচনা
মারাত্মক খাদ্য সঙ্কটে জর্জরিত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী ও হামাসের যোদ্ধাদের মধ্যে গতকাল রোববার (৩ মার্চ) যুদ্ধের তীব্রতা আরও বেড়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে দুপক্ষকে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়ে মিশরের রাজধানী কায়রোতে মধ্যস্থতাকারীদের উদ্যোগে আলোচনা চলছে। খবর এএফপির।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, গাজার মধ্যাঞ্চলে ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাহায্যপণ্যবাহী একটি ট্রাক। এ ঘটনায় মারা গেছে বেশ কয়েকজন। তবে ইসরায়েল বলেছে ওই ট্রাকটিতে সাহায্যপণ্য ছিল না।
এদিকে, গাজার ক্ষুধাপীড়িত মানুষের জন্য সাহায্যপণ্য সরবরাহে এবং হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে বন্দিবিনিময়ের লক্ষ্য নিয়ে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতিরর প্রস্তাবকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও হামাসের প্রতিনিধিরা কায়রোতে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তবে গাজা উপত্যকা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিতে হামাসের দাবির মুখে আলোচনা কিছুটা আটকে আছে। যুদ্ধ থামানোর এত উদ্যোগের পরও গাজায় ইসরায়েলি বোমাবর্ষণ ও শহর জুড়ে অভিযান থেমে যায়নি। গতকাল রোববারও গাজার রাফাহ ও খান ইউনুসে চলে ইসরায়েলি বাহিনীর অবিরাম বিমান হামলা।
গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৯০ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছে বলে জানিয়েছে হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তারা জানিয়েছে এর ফলে সেখানে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৩০ হাজার ৪১০ জনে।
ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ এই নৃসংশতার শিকার জমজ শিশু নাঈম ও উইসামকে কবর দেওয়া হয়েছে তার মা রানিয়ার করুণ বিলাপের মধ্য দিয়ে। শিশুদের এক আত্মীয় জানান, ইসরায়েলি বাহিনী যখন তাদের বাড়িতে বোমাবর্ষণ করে তখন সেখানে শুধুমাত্র বেসামরিক লোকজনই ছিল। হামলায় এক পরিবারের ঘুমন্ত ১৪ সদস্য মারা যায়।
এদিকে, মুসলিমদের পবিত্র মাস রমজান শুরুর আগেই গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে জোর তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন মধ্যস্থতাকারীরা।
হামাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যদি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে ইসরায়েল সম্মত হয় তবে তা কার্যকর করতে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে। লেবানন ভিত্তিক হামাসের একজন নেতা কাতারের আল-আরাবি টেলিভিশনকে জানিয়েছেন, হামাস সাময়িক যুদ্ধবিরতির চাইতে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির ওপর বেশি জোর দিচ্ছে।
তবে হামাসের অন্যতম দাবি গাজা থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের বিষয়টিতে অসন্তোষ জানিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি চান হামাসকে ধ্বংস করতে ও সব পণবিন্দিকে মুক্ত করতে।
এছাড়া হামাস যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন ৪০০ থেকে ৫০০টি ট্রাক প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়েও দাবি জানিয়ে আসছে। এসব ট্রাকে থাকবে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানি তেল।