গাজায় সাহায্যপ্রত্যাশীদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত ১৯
গাজা শহরের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাহায্যপণ্য নিতে আসা অপেক্ষমাণ বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার গুলিবর্ষণে কমপক্ষে ১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। গাজার হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং মিডিয়া অফিস থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে। খবর আলজাজিরার।
গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) গাজার মিডিয়া অফিসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আল-কুয়েত পণ্য বিতরণ কেন্দ্রে আটা এবং অন্যান্য সাহায্যসামগ্রী নিতে আসা হাজারো নাগরিকের ওপর দখলদার বাহিনী গণহত্যা চালিয়েছে। এই হামলায় মোট ১৯ জন নিহত হয়েছে এবং আরও ২৩ জন আহত হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ক্ষুধার্ত মানুষ যখন সাহায্যপণ্য ও আটার ব্যাগের জন্য অপেক্ষা করছিল, তখন ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের ওপর মেশিনগান ও ট্যাংকের গোলা বর্ষণ করে। যদিও এসব অসহায় লোকজন দখলদার বাহিনীর প্রতি কোনো প্রকার বিপদের আশঙ্কা হয়ে ওঠেননি।’
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা বিভাগের মুখপাত্র মাহমুদ বাসেল বলেন, ‘সাধারণ নাগরিকদের ওপর ভারী অস্ত্রের গুলি বর্ষণ করা হয়। ঘটনার শিকার লোকজনকে পাশের আললি আরব হাসপাতালে পাঠানো হয়। তবে গাজার ভেঙে পড়া স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কারণে অনেক লোককে খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসা দেওয়া হয়।’
মাহমুদ বাসেল আরও বলেন, ‘সেখানে গুরুতর আঘাত নিয়ে অনেকে ছিলেন, কারো কারো শরীরে ছিল হামলার ক্ষত। তাই এখানকার বাস্তব অবস্থা ছিল খুবই বেদনাদায়ক, কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ।’
আলা আল-খুদারি নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘ভিড়ের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী গুলিবর্ষণ করে। এতে বহু লোক মারা যায়, আর বাকিরা আহত হয়ে পড়ে থাকে। নিজেদের সন্তানদের জন্য একমুঠো খাবার নিতে এসে তারা প্রাণ হারালেন।’
এদিকে গত সোমবার জাতিসংঘের সহায়তায় এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজার অর্ধেক ফিলিস্তিনি বিপর্যয়কর দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। আগামী মে মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে সেখানে দুর্ভিক্ষ দেখা দেবে। কিন্তু বিতরণ ব্যবস্থা সেখানে ক্রমেই বিপজ্জনক হয়ে দেখা দিচ্ছে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা হয়ে উঠছে প্রাণঘাতী।’
গত মঙ্গলবারও গাজার উত্তরাঞ্চলে সাহায্যপ্রত্যাশী ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি ও বোমাবর্ষণ করলে ২৩ জন নিহত হয় এবং আহত হন আরও অনেকে। এ ছাড়া গত ২৯ ফেব্রুয়ারি গাজা শহরে মানবিক সহায়তাপণ্য নিতে আসা লোকজনের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী গুলিবর্ষণ করলে ১১৮ জন নিহত ও ৭৬০ জন আহত হয়।