গাজায় ইসরায়েলি হামলায় তিন বিদেশি ত্রাণকর্মীসহ নিহত ৫
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় তিন বিদেশি ত্রাণকর্মীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার একজন। অপর দুই ত্রাণকর্মীর একজন যুক্তরাজ্য ও পরজন পোল্যান্ডের বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।
নিহতরা সবাই দাতব্য সংস্থা ‘ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন (ডব্লিউসিকে)’ এর কর্মী ছিলেন। এ বিষয়ে ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেনের প্রতিষ্ঠাতা ও শেফ জোসে আন্দ্রেস বলেন, তার কর্মীরা ‘ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান হামলায়’ নিহত হয়েছে।
গাজার হামাস পরিচালিত মিডিয়া অফিসও এ ঘটনায় ইসরায়েলকে দায়ী করেছে। হামলার বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি বিবিসি।
গাজার আল-আকসা হাসপাতালের একটি মেডিকেল সূত্র বিবিসিকে জানায়, নিহত চার ত্রাণকর্মী ও তাদের ফিলিস্তিনি গাড়িচালকের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে। দেইর আল-বালাহর উপকূলীয় সড়কে তাদের গাড়িটি বিমান হামলার শিকার হয়।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ নিশ্চিত করেন, নিহত ত্রাণকর্মীদের মধ্যে তাদের নাগরিক লালজাওমি ফ্রাঙ্ককম রয়েছেন। নিহতের পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি সমবেদনা জানান তিনি। এক বিবৃতিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি (লালজাওমি ফ্রাঙ্ককম) দাতব্য সংস্থার মাধ্যমে সাহায্য প্রদানের জন্য স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে বিদেশে কর্মরত ছিলেন। গাজায় চরম বঞ্চনার শিকার মানুষের জন্য কাজ করছিলেন তিনি। এই ঘটনা সম্পূর্ণরূপে অগ্রহণযোগ্য।’
প্রাণহানির এই ঘটনাকে ‘ট্র্যাজেডি’ হিসেবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ আরও বলেন, অস্ট্রেলিয়া এ ঘটনায় জড়িতদের ‘পূর্ণ জবাবদিহিতা’ দাবি করে। এ ধরনের ঘটনায় আর কখনই হওয়া উচিত নয়।
ফিলিস্তিনি মেডিকেল সূত্র বিবিসিকে জানায়, ত্রাণকর্মীরা ‘ওয়ার্ল্ড চ্যারিটি কিচেনের (ডব্লিউসিকে)’ লোগো সম্বলিত বুলেট-প্রুফ ভেস্ট পরা ছিলেন।
ডব্লিউসিকের এক বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাণহানির রিপোর্ট সম্পর্কে তারা অবগত। তাদের সদস্যরা ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনীর আক্রমণে নিহত হয়েছে। গাজায় মানবিক খাদ্য সরবরাহের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কাজ করার সময় এ ঘটনা ঘটে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘এটি একটি ট্র্যাজেডি। মানবিক সহায়তা কর্মী এবং বেসামরিক লোকদের কখনই লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়। আমরা সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করার পরে আমরা আরও বিস্তারিত জানাব।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সের একটি পোস্টে দাতব্য সংস্থা ডব্লিউসিকের প্রতিষ্ঠাতা ও শেফ আন্দ্রেস ইসরায়েলি সরকারকে ‘এই নির্বিচার হত্যা বন্ধ করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
এ খবরের প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলেছে, এই ‘দুঃখজনক ঘটনার’ পরিস্থিতি বোঝার জন্য তারা সর্বোচ্চ পর্যায়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ পর্যালোচনা করছে।
আইডিএফ আরও জানায়, মানবিক সহায়তা বিতরণ কার্যক্রম নিরাপদ করার জন্য তারা ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং গাজার জনগণকে খাদ্য ও মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য ডব্লিউসিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে।
এ ঘটনায় মন্তব্যের জন্য যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তর এবং পোল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এখনও কোনো তথ্য জানানো হয়নি।