গাজায় আগ্রাসন থামাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ, পুলিশের অভিযান
গাজায় যুদ্ধ থামাতে ও ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্যাম্পাসে যে প্রতিবাদ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে তাতে শক্তিপ্রয়োগ করতে শুরু করেছে দেশটির পুলিশ। এর অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) নিউইয়র্ক শহরের প্রাণকেন্দ্রে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঢুকে পড়ে। পুলিশ সদস্যরা এ সময় ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদি শিক্ষার্থীদের একটি ভবন থেকে বের করে দিতে শুরু করে। খবর এএফপির।
হ্যামিলটন বিল্ডিং নামে পরিচিত ওই ভবনটিতে পুলিশ মই ব্যবহার করে এর তিনতলায় প্রবেশ করে এবং বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। মঙ্গলবার ভোর থেকেই শিক্ষার্থীরা ওই ভবনে অবস্থান করতে থাকে।
১৯৬০ ও ৭০ এর দশকে ভিয়েতনাম যুদ্ধের প্রতিবাদের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ ধরনের বিক্ষোভ সমাবেশের মতো এমন নজিরবিহীন ঘটনা আগে আর ঘটেনি। কাম্পাস থেকে এ পর্যন্ত কয়েকশত বিক্ষোভরত শিক্ষার্থী ও আন্দোলনকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের বহিষ্কারের হুমকির মুখেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, শিক্ষার্থীরা কলাম্বিয় ইউনিভার্সিটির হ্যামিলটন হল দখলে নেওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্টের দপ্তর হোয়াইট হাউস ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছে এটা পুরোপুরি ভুল পদ্ধতি। এ বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র বলেন, ‘এটা শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের উদাহরণ হতে পারে না।’
অন্যদিকে নর্থ ক্যারোলাইনা ইউনিভার্সিটিতে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করে। এছাড়া পুলিশ সেখানকার ক্যাম্পানে থাকা যুদ্ধবিরোধী শিবির থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেয়।
এছাড়া ওরেগন রাজ্যের পোর্টল্যান্ড স্টেট ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস গতকাল মঙ্গলবার বন্ধ ঘোষণা করে দেওয়া হয়।
ব্রাউন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস থেকে যুদ্ধবিরোধী শিবির সরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষ প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। এর ফলে শিবির সরিয়ে নেওয়ার পরিবর্তে কর্তৃপক্ষ একটি ভোটাভুটির আয়োজন করবে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগের বিষয়ে।
এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক দপ্তরের প্রধান ভলকার তুর্ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ দমাতে ব্যাপকহারে শক্তি প্রয়োগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানের অধিকার সমাজের মৌলিক বিষয়।