যুদ্ধবিরতির আলোচনা শেষে গাজায় ইসরায়েলের হামলা
মিশরে যুদ্ধবিরতি আলোচনা ফলপ্রসু না হওয়ায় ইসরায়েল আবারও আজ শুক্রবার (১০ মে) গাজায় হামলা চালিয়েছে৷ মিশর সীমান্তে অবস্থিত রাফায় হামলা চালাতে দেখেছেন এএফপির সাংবাদিকেরা৷ আর গাজার উত্তরে আকাশ পথে হামলা ও সংঘর্ষের খবর দিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা৷
গাজায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতির শর্ত ঠিক করতে কায়রোতে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন ইসরায়েল ও হামাসের কর্মকর্তারা৷ তারা বৃহস্পতিবার কায়রো ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে মিশরের গোয়েন্দা সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম আল-কাহেরা নিউজ৷ হামাসের পক্ষ থেকেও তাদের প্রতিনিধিদের কায়রো ছাড়ার কথা নিশ্চিত করা হয়েছে৷
মিশর বলছে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য দুই পক্ষকে অবশ্যই ‘নমনীয়তা' দেখাতে হবে৷
যুক্তরাষ্ট্রের সিআইএর পরিচালক উইলিয়াম বার্নস যুদ্ধবিরতি আলোচনার অংশ ছিলেন৷ তিনিও শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যাচ্ছেন বলে হোয়াইট হাউস জানিয়েছে৷
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কারবি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘তবে এর মানে এই নয় যে, আলোচনা এখনও চলছে না। আমরা এখনও বিশ্বাস করি, সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ আছে, কিন্তু এর জন্য দুই পক্ষের নেতৃত্ব দরকার।”
এদিকে রাফায় স্থাপিত শরণার্থী শিবিরের বাসিন্দা গাজার ইনাস মাজেন আল-শামি বলছেন, তারা স্থবিরতায় বিরক্ত৷ ‘‘আমাদের কোনো অর্থ নেই৷ আর আমাদের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার উপায় নেই,” বলেন তিনি৷
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ইসরায়েলে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পর ইসরায়েল গাজায় হামরা শুরু করে৷ এতে এখন পর্যন্ত গাজায় অন্তত ৩৪ হাজার ৯০৪ জন মারা গেছেন বলে হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে৷
৭ অক্টোবরের হামলায় ইসরায়েলের ১,১৭০ জনের বেশি মানুষ মারা যান বলে এএফপি জানিয়েছে৷ হামলার সময় প্রায় আড়াইশ ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছিল হামাস৷ এখনও ১২৮ জন জিম্মি আছেন বলে ইসরায়েল জানিয়েছে৷
ইসরায়েলের হামলা শুরুর পর গাজার বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ পালিয়ে রাফায় আশ্রয় নিয়েছে৷ সেখানে এখন প্রায় ১৫ লাখ মানুষ বাস করছেন৷ যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ রাফায় হামলা না চালাতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে৷ রাফায় বড় আকারে হামলা করলে ইসরায়েলকে আর অস্ত্র দেওয়া হবে না বলে সম্প্রতি হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন৷ জার্মানিতেও এটি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার জানান জার্মানির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস৷
তবে ইসরায়েল বলছে, যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করতে হলে তাদের রাফায় সেনা পাঠাতে হবে, কারণ, সেখানে হামাসের ঊর্ধ্বতন সামরিক নেতারা লুকিয়ে আছেন৷
মঙ্গলবার থেকে রাফার কিছু অংশে সামরিক অভিযান চালিয়েছে ইসরায়েল৷
এদিকে, জাতিসংঘের ‘রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর পেলেস্টাইন রিফিউজিস' বা ইউএনআরডাব্লিউএ শুক্রবার জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী রাফার দিকে এগোনো শুরুর পর প্রায় এক লাখ ১০ হাজার মানুষ রাফা থেকে পালিয়ে গেছে৷