গাজা যুদ্ধ : যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ
গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে এবং ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে অঝোর বৃষ্টির মধ্যে ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টাডি সেন্টারের বিপরীত পাশে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নিয়েছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। ইউজেনিয়া ও আরও পাঁচজন শিক্ষার্থী মোট চারটি তাঁবু স্থাপন করেন সেখানে। তীব্র ঠান্ডা উপেক্ষা করে পরের কয়েকটি রাতে আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী এসে যোগ দেন তাদের সঙ্গে।
এ প্রসঙ্গে ব্রিস্টল শাখার ফিলিস্তিনি গ্রুপের সংগঠক ইউজেনিয়া জানান, সেখানে এখন কমপক্ষে ২০টি তাঁবু স্থান করে নিয়েছে। দিনে রাতে মিলিয়ে সেখানে ৩০ জনেরও বেশি মানুষ অবস্থান করছে। তবে কোনো নির্দিষ্ট কর্মসূচি থাকলে সেদিন অবস্থানকারীর সংখ্যা আরও বেড়ে যায়।
নিজেদের অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে ইউজেনিয়া বলেন, ‘স্টাফ ও শিক্ষার্থীদের সমর্থন এবং আরও লোকজনের অংশগ্রহণের আশ্বাস খুবই উৎসাহজনক। ফিলিস্তিনিদের অধিকার আদায়ে তাদের পক্ষে আন্দোলন এতটাই শক্তিশালী হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাহী বিভাগ এখন ভান করে হলেও তাতে সায় দিচ্ছে।’
শিবিরগুলোতে রয়েছে খাবার, ফেস মাস্ক, কোভিড টেস্ট ব্যবস্থাসহ ফিলিস্তিনের ইতিহাস নিয়ে রচিত অনেক বইপুস্তক। এ ছাড়া রয়েছে প্রতিবাদকারীদের অধিকারের পক্ষে লেখা অনেক প্রচারপত্র, রয়েছে ব্রিস্টল কীভাবে একটি গণহত্যার মতো অবৈধ কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে তার বর্ণনা দিয়ে লেখা লিফলেট।
শিক্ষার্থীদের দাবির মূলে রয়েছে ইসরায়েলের যুদ্ধের কাজে যেসব কোম্পানি সহায়তা করে যাচ্ছে, তাদের সঙ্গে যেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সম্পর্ক ছিন্ন করে।
সংগঠক ইউজেনিয়া জানান, তাদের এই দাবির বিষয়ে যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা হয়েছে তার।
যুক্তরাজ্যজুড়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী বিশ্বজুড়ে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে চলতে থাকা আন্দোলনের অংশ হিসেবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। গত সাত মাসে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসী হামলায় ৩৫ হাজারেরও বেশি লোক মারা গেছে।
এ ছাড়া ক্যামব্রিজের ফিলিস্তিনিদের পক্ষে কাজ করা গ্রুপটি জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রিনিটি কলেজ ইসরায়েলের গণহত্যার কাজকে সমর্থনকারী বিভিন্ন কোম্পানিতে লাখ লাখ পাউন্ড বিনিয়োগ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো যুক্তরাজ্যের ক্যাম্পাসগুলোতে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন সহিংস না হয়ে উঠলেও ব্রিটিশ শিক্ষার্থীরা বলছেন, তাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে যোগ দিয়েছে অনেক ইহুদ শিক্ষার্থী ও বিচক্ষণ ব্যক্তিরা।