দক্ষিণ আফ্রিকায় রাজনৈতিক আধিপত্য হারাচ্ছে এএনসি
গত ৩০ বছরের রাজনৈতিক আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) সবচেয়ে খারাপ ফলাফলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশটির ঐতিহাসিক এই নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে ভোটাররা দলে দলে এএনসি’র ওপর থেকে তাদের সমর্থন সরিয়ে নিচ্ছেন। খবর এএফপির।
এবারের নির্বাচনে এএনসি যদি ৫০ শতাংশের কম ভোট পায় তবে নতুন সরকার গঠনে তাদের কোয়ালিশন অংশীদারদের পুনর্নির্বাচনের জন্য চেয়ে থাকতে হবে। এটি হতে যাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকার গণতন্ত্রের অভিযাত্রায় একটি ঐতিহাসিক বিবর্তন, কেননা ১৯৯৪ সাল থেকে দেশের পার্লামেন্টে এএনসি নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরীষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসীন ছিল।
গত বুধবার অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে দেওয়া মোট ভোটের ৫৫ শতাংশ গণনার পর দেখা যাচ্ছে এএনসি ৪২ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছে। এই হার দলটির ২০১৯ সালের ৫৭ শতাংশ ভোট পাওয়ার যে হার ছিল তার চেয়ে অনেক নিচে অবস্থান করছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীন ইলেক্টোরাল কমিশনের (আইইসি) নির্বাচনি তথ্যউপাত্ত অনুসারে মধ্য-ডানপন্থি ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) ২৪ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর পরে রয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমার এমকে পার্টি, যারা পেয়েছে ১১ শতাংশ ভোট আর বামপন্থি ইকোনোমিক ফ্রিডম ফাইটার্স (ইএফএফ) পেয়েছে ১০ শতাংশ ভোট।
তবে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ হতে আরও দুদিন লাগবে। এদিকে দেশটির ইলেক্টোরাল কমিশনের ওয়েবসাইট আজ কারিগরি কারণে সাময়িকভাবে অকেজো হয়ে যায়। এই ত্রুটির জন্য ক্ষমা চেয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তথ্য-উপাত্ত অক্ষত রয়েছে এবং এক্ষেত্রে কোনো আপস করা হবে না। কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, নির্বাচনের ফলাফল কোনোভাবেই প্রভাবিত হবে না।
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী মহান নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার নেতৃত্বে এএনসি দেশটির গণতান্ত্রিক অভিযাত্রার অগ্রদূতের ভূমিকা রেখে আসছে। এই দল থেকেই পাঁচজন দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
গত প্রায় তিন যুগেরও বেশি সময় ধরে চ্যালেঞ্জহীন শাসনের পর এএনসির নেতারা বড় ধরনের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন এমন অভিযোগে উত্তাল দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গন।
এ ছাড়া আফ্রিকা মহাদেশের শিল্পনির্ভর অন্যতম বড় অর্থনীতির দেশ হিসেবে বিবেচিত দক্ষিণ আফ্রিকায় দেখা দিয়েছে মন্দার ধারা দেশজুড়ে বেড়েছে অপরাধ আর বেকারত্ব, ছুঁয়েছে সর্বকালের রেকর্ড।