শেখ হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই : হোয়াইট হাউস
গণ-আন্দোলনের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ থেকে পালিয়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। সম্প্রতি বাংলাদেশে রাজনৈতিক এ পটপরিবর্তনের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এবার এই ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউস বলেছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে উৎখাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই। সোমবার (১২ আগস্ট) বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়েরে গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমাদের আদৌ কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র সরকার এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিল বলে যদি কোনো প্রতিবেদনে বলা হয় বা গুজব ছড়ানো হয়, তবে তা নিছক মিথ্যা।’
রয়টার্স জানায়, গত রোববার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট এর প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেখানে তিনি ক্ষমতা থেকে উৎখাতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে বলেছেন, মানুষের মৃত্যু এবং সম্পদহানি ঠেকাতেই তিনি সরে গেছেন।
শেখ হাসিনাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সেন্ট মার্টিন আর বঙ্গোপসাগর আমেরিকার হাতে ছেড়ে দিলে আমি ঠিকই ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।’
এ ধরনের বিদেশি শক্তির দ্বারা ‘ব্যবহৃত’ না হওয়ার জন্য নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও সতর্ক করা হয়েছে ওই বার্তায়।
এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় অবশ্য দাবি করেছেন, তার মাকে উদ্ধৃত করে যে বিবৃতির খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা বানোয়াট।
মাইক্রো ব্লগিং সাইট এক্সে এক পোস্টে জয় লেখেন, ‘সম্প্রতি একটি পত্রিকায় আমার মাকে উদ্ধৃত করে তার পদত্যাগের যে বিবৃতি ছাপা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি তার সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি, তিনি ঢাকা ছাড়ার আগে বা পরে কোনো বিবৃতি দেননি।’
এদিকে, হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নে মুখপাত্র কারিন জ্যঁ-পিয়ের বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ সরকারের ভবিষ্যৎ কী হবে, সে দেশের জনগণেরেই তা নির্ধারণ করা উচিত এবং আমাদের অবস্থান ঠিক এটাই।’
কয়েক সপ্তাহের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং এরপর গণবিক্ষোভের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর গত ৮ আগস্ট নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেয়।