যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়ায় স্কুলে বন্দুকধারী কিশোরের গুলিতে নিহত ৪
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের একটি হাইস্কুলে গতকাল বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) ১৪ বছর বয়সী এক বন্দুকধারীর গুলিতে দুজন শিক্ষার্থীসহ চারজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ৯ জন। স্থানীয় আইনপ্রয়েগকারী সংস্থা এ তথ্য দিয়েছে। খবর এএফপির।
বন্দুকধারী কিশোর নিজের স্কুলেই এই হামলা চালায়। হামলার পর তাকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। জর্জিয়া ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন জানিয়েছে, ওই কিশোরের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ আনা হবে এবং একজন পরিণত ব্যক্তি হিসেবে তার বিচার করা হবে। গুলিতে স্কুলটির দুজন শিক্ষকও প্রাণ হারান।
হামলার ঘটনার পরপর লোকজন ঘটনাস্থল এপালাচি হাই স্কুলের খেলার মাঠে জড়ো হয় এবং হাতে হাত মিলিয়ে বৃত্ত তৈরি করে প্রতিবাদ জানায়। গোলাগুলির এই ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এ বছর সংঘটিত ৪০০টি অস্ত্র সংঘাতের ঘটনার সর্বশেষ সংযোজন।
এদিকে এ ঘটনার পরে দেশটিতে স্কুলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে। কাউন্টি শেরিফ জুড স্মিথ জানান, স্কুল রিসোর্স অফিসার ওই কিশোরকে ঘটনার পর নিষ্ক্রিয় করেন। তিনি বলেন, ‘বন্দুকধারী বুঝতে পারে যে সে আত্মসমর্পন না করলে পুলিশ অফিসার তাকে ছাড়বে না এবং এ কারণে সে অস্ত্র ফেলে মাটিতে শুয়ে পড়ে। পরে একজন ডেপুটি তাকে নিজেদের জিম্মায় নেয়।’
এদিকে গতকাল দিনের শেষভাগে মার্কিন কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (এফবিআই) জানায়, ওই কিশোর এক বছর আগে স্কুলে গুলিবর্ষণের হুমকি দিয়েছিল। এ ঘটনার পর কাউন্টি শেরিফ অফিস তার বাবার সঙ্গে কথা বলে। সে সময় ওই কিশোর গুলি চালানোর হুমকি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে। পুলিশ এরপর ওই কিশোরকে নজরদারিতে রাখতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানায়।
শেরিফ জুড স্মিথ আরও জানান, পুলিশ এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি ওই কিশোর টার্গেট করে লোকজনকে গুলি করেছে কিনা। এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষ অস্ত্রটিও শনাক্ত করতে পারেনি।
এ বিষয়ে একজন শিক্ষার্থী জানান, সবাই প্রথমে মনে করেছিল স্কুলে গুলিবর্ষণের যে মহড়া হয় সে রকম একটি ঘটনা ছিল এটি। আলেক্সান্দ্রা রোমিও নামের ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘ঘটনা বুঝতে পেরে আমাদের শিক্ষিকা সবাইকে এক কোনায় জড়ো করেন। এ সময় সবাই একে অন্যকে জড়িয়ে ধরে রেখেছিল। এর পরপরই বন্দুকধারী একজন পুলিশ কর্মকর্তা আসেন এবং জানান, এখানে কোনো মহড়া হচ্ছে না এবং আমরা কেউ সেখানে নিরাপদ নই।’
আরেকজন শিক্ষার্থী জানান, তিনি স্কুলভবনের মেঝেতে রক্ত ও মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেছেন।
জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের রাজধানী আটলান্টা থেকে ৭০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে উইন্ডার শহরের কাছে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গোলাগুলির ঘটনার বেশ কিছু সময় পর অভিভাবকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।