৩৬০০ কর্মী ছাঁটাই করবে মেটা
কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের ভিত্তিতে ৫ শতাংশ কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা। চলতি বছরের শেষ নাগাদ খালি হওয়া পদগুলোতে নতুন লোকবল নিয়োগ দেবে প্রতিষ্ঠানটি।
মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি প্রতিষ্ঠানের কর্মক্ষমতা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এজন্য অদক্ষ কর্মীদের দ্রুত অপসারণ করা হবে।’
গত মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরীণ এক বৈঠকে এমন সিদ্ধান্তের কথা জানান জাকারবার্গ। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ। পরে মেটার এক কর্মকর্তার বরাতে তথ্য নিশ্চিত বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
মেটার সর্বশেষ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে সর্বমোট ৭২ হাজার লোকবল কর্মরত রয়েছে। এ হিসেবে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কর্মী মেটা থেকে ছাঁটাই হতে পারেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেটার ওই কর্মকর্তা জানান, সাধারণত নতুন কর্মীরা এক বছরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে তাদের ছাঁটাই করা হয়। তবে এবার এটি আরও বিস্তৃত আকার ধারণ করবে, সব কর্মীর কর্মদক্ষতা মূল্যায়নের আওতায় আনা হবে।
এমন একটি সময় কর্মী ছাঁটাইরে ঘোষণা এসেছে, যখন প্রতিষ্ঠানটি বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের পদ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগ পদত্যাগ করেছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত রিপাবলিকান সদস্য জোয়েল কাপলানকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) মার্ক জাকারবার্গ এক ভিডিও বার্তায় ঘোষণা দেন, ফেসবুকের যেসব তৃতীয় পক্ষ বা প্রতিষ্ঠানের কর্তৃত্ব (ফ্যাক্টচেকার) ছিল, এগুলোর ব্যবহার কমিয়ে এনে কমিউনিটি নোটস ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। মেটার ফ্যাক্টচেকাররা রাজনৈতিকভাবে অনেক বেশি পক্ষপাতদুষ্ট থেকেছে। তারা আস্থা তৈরির বদলে অনেক বেশি আস্থা নষ্ট করেছে।
ভিডিও পোস্টের শিরোনামে জাকারবার্গ লেখেন, ‘মুক্ত মতপ্রকাশ ঘিরে আমাদের শিকড়ে ফেরার সময় এখন। আমরা ফ্যাক্টচেকারগুলোর পরিবর্তে এখন কমিউনিটি নোট ব্যবহার করব। আমাদের নীতিগুলোকে আরও সরলীকরণ করছি এবং ভুল কমানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
মেটার প্রধান নির্বাহী বিবৃতিতে আরও বলেন, অভিবাসন ও লিঙ্গের মতো বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে যেসব বিধিনিষেধ ছিল, সেগুলো থেকে মুক্তি পাবে মেটা। যেসব দেশের সরকার যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের ওপর আরও বেশি সেন্সরশিপের জন্য চাপ দিচ্ছে, তাদের ওপর চাপ বাড়াতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করবে মেটা।
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে সখ্যতা করতে সম্প্রতি এমন নীতিগত পরিবর্তন নিয়েছে মেটা, এমনটাই ধারণা করছেন সমালোচকরা।