ভিডিও বার্তায় শঙ্কা প্রকাশের পরই বাবার গুলিতে প্রাণ গেল তরুণীর
‘আমি ভিকিকে বিয়ে করতে চাই। আমার পরিবার প্রথমে এই বিয়েতে সম্মতি দিয়েছিল। কিন্তু এখন তারা অস্বীকার করেছে। তারা প্রতিদিন আমাকে পিটিয়ে হত্যা করার হুমকি দেয়। যদি আমার কিছু হয়ে যায়, তবে আমার পরিবারই দায়ী থাকবে।’ গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক ভিডিও বার্তায় এভাবেই আকুতি প্রকাশ করছিলেন ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের গোয়ালিয়র জেলার তরুণী তানু গুরজর।
চার দিন পরেই ধুমধাম আয়োজনে তানুর বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পারিবারের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে রাজি ছিলেন না তানু। কারণ তার উত্তর প্রদেশের আগ্রার বাসিন্দা ভিকম মাওয়াইয়ের সঙ্গে ছয় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ নিয়েই পরিবারের সঙ্গে তানুর দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। এর মাঝেই তানুর ৫২ সেকেন্ডের আবেগঘন বার্তার ভিডিও ক্লিপটি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর আরও ফুঁসে ওঠে তার পরিবারের সদস্যরা। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পুলিশের সামনেই তানুকে গুলি করে হত্যা করেন তার বাবা মহেশ গুরজর।
সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তানুর ভিডিও বার্তার ক্লিপটি দেখতে পেরে তার বাসায় ছুটে যান গোয়ালিয়রের পুলিশ সুপার ধর্মবীর সিং। তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েতের উপস্থিতিতে পারিবারিকভাবে সমস্যাটি সমাধানের চেষ্ট করছিলেন। আলোচনার একপর্যায়ে তানু নিজ বাড়িতে থাকতে অস্বীকার করেন। তিনি তাকে ওয়ান-স্টপ সেন্টারে (সহিংসতার শিকার নারীদের পর্যবেক্ষণে রাখার জন্য সরকারি প্রতিষ্ঠান) নিয়ে যেতে পুলিশকে অনুরোধ করেন।
এ ঘটনার একপর্যায়ে মহেশ গুরজর একটি দেশীয় বন্দুক এনে তার মেয়েকে বুকে গুলি করেন। একই সময়ে তানুর কপালে গুলি চালান তার চাচাতো ভাই রাহুল। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মারা যান ২০ বছরের এই তরুণী।
হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ ও পরিবারের সদস্যদের দিকে অস্ত্র তাকিয়ে আরও সহিংসতা চালানোর হুমকি দেন মহেশ ও রাহুল। এ সময় পুলিশ মহেশকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়, কিন্তু পিস্তল তাক করে পলিয়ে যায় রাহুল।
পুলিশের জানায়, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। রাহুলকে খুঁজে বের করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে। নিহত তানুর সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টগুলো পর্যালোচনা করা হচ্ছে।