বার্নিকাটসহ ৩ কূটনীতিককে পদত্যাগ করতে বলেছেন ট্রাম্প সহযোগীরা
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনবল ও অভ্যন্তরীণ সমন্বয়ের দেখভাল করা তিন জ্যেষ্ঠ কূটনীতিককে সরে যেতে বলেছেন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগীরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এমন খবর এসেছে।
দেশটির কূটনৈতিক অঙ্গনে যে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে, তাদের সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সেই আভাসই মিলছে। জানা গেছে, ডেরেক হোগান, মার্সিয়া বার্নিকাট ও আলিনা টেপলিটসকে পদত্যাগ করতে বলেছে দ্য এজেন্সি রিভিউ টিম। এটি নতুন প্রশাসনের হাতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব হস্তান্তরের তদারকি করছে।
প্রশাসনে যারা রাজনৈতিকভাবে নিয়োগ পান, নতুন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব গ্রহণের সময় সাধারণত তারা নিজ ইচ্ছায় সরে যান। আর ক্যারিয়ার কূটনীতিকরা দায়িত্ব পালন করে যান। বহু বছর ধরে ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান প্রশাসনের হয়ে কাজ করেছেন এই তিন কূটনীতিক। বিভিন্ন দেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবেও কাজ করেছেন তারা।
দুদিন পর ২০ জানুয়ারি নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক হবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের। নিজের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারকালে প্রশাসনকে শিকড় থেকে পরিচ্ছন্ন করার অঙ্গীকার করেন তিনি।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, ‘এর মধ্য দিয়ে একটা খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।’ এ ঘটনায় মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিংবা ওই তিন কূটনীতিক—কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্ভবত আরও সংঘাতমূলক পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করতে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যেও শান্তি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
এ ছাড়া কিছু অপ্রচলিত পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করেছেন ট্রাম্প। যেমন, গ্রিনল্যান্ডকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অংশ করতে চাচ্ছেন ও ন্যাটোকে প্রতিরক্ষা খরচ বাড়াতে বলেছেন। কাজেই নিজের লক্ষ্যপূরণে তার এমন কূটনীতিক দরকার, যারা দায়িত্বশীলভাবে তার নীতি বাস্তবায়ন করবে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিলেন ট্রাম্প। তখন নেতৃত্ব পর্যায়ে থাকা বেশ কিছু কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। এই তিন কূটনীতিককে পদত্যাগ করতে বলায় সেই সময়ের পরিস্থিতির কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাজনৈতিক নিয়োগের সংখ্যা বাড়াতে চাচ্ছেন ট্রাম্প সহযোগীরা। এরইমধ্যে বেশ কয়েকজনের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।
পদত্যাগ করতে যাওয়া তিন কূটনীতিকের মধ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্বাহী সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করছেন হোগান। হোয়াইট হাউসের সঙ্গে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন ব্যুরোর মধ্যে তথ্যপ্রবাহের ব্যবস্থা করে আসছেন তিনি। আর তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কাজ করছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আলিনা টেপলিটস।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে আছেন বার্নিকাট। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মানোন্নয়ন, অ্যাসাইনমেন্ট ও নিয়োগের কাজ করে তার বিভাগ। বার্নিকাট ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।