বুদ্ধি বাড়াতে এক ডজন বই
কথায় আছে, একটি বই ১০০ জন ভালো বন্ধুর সমান। বই তাঁর পাঠককে কখনো হাসায়, কখনো কাঁদায়। তবে বেশ কিছু বই রয়েছে, যা পাঠকের জ্ঞান বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। যা পড়ে বুদ্ধিমান হয়ে ওঠেন পাঠক। বিজনেস ডটকমের সৌজন্যে আজ থাকছে এমন ১২টি বইয়ের খবর, যা তার পাঠককে বুদ্ধিমান করে তুলবে।
১. দি আর্ট অব ওয়ার (সান তজু)
প্রাচীন এই বইতে লেখা বিভিন্ন কলাকৌশল আগে সামরিক কাজে ব্যবহৃত হতো। তবে এ কলাকৌশলগুলো শুধু সামরিক ক্ষেত্রেই নয়, ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও এটির ব্যবহার বেশ ভালো ফল দিয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অথবা নতুন উদ্যোক্তাদের বইটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
২. থিংকিং, ফাস্ট অ্যান্ড স্লো (ড্যান কানমান)
ব্যবসায় সফলতার জন্য সঠিক মানসিকতা জরুরি। এই বই লেখা হয়েছে সে মানসিকতা উন্নয়নের উদ্দেশ্যে। বইটি পড়লে জানা যাবে কৌশলগত দিক ঠিক রেখে কীভাবে দ্রুত এবং ধীরগতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে কখনো খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হয়। আবার কখনো ধীরে, অনেক ভাবনা-চিন্তা করে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তে আসতে হয়। ড্যান কানমান বইটির পাঠকদের জন্য দ্রুতগতি এবং ধীরগতি দুটি পথই খোলা রেখেছেন।
৩. অ্যা শর্ট হিস্টোরি অব নিয়ারলি এভরিথিং (বিল ব্রাইসন)
বইটিতে মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং মানুষের আধুনিক যুগে পা রাখার পূর্বের ইতিহাস বর্ণনা করা হয়েছে। পাশাপাশি পদার্থ, জীববিজ্ঞান, রসায়ন ও বিজ্ঞানভিত্তিক আরো অনেক বিষয় বিল ব্রাইসন তাঁর বইতে উল্লেখ করেছেন। এ ছাড়া কোনো আড্ডা বা কথোপকথনে সবাইকে তথ্যের মাধ্যমে চমকে দিতে চাওয়া পাঠকদের জন্য বইটি বেশ কার্যকর।
৪. দ্য গ্রেটেস্ট সিক্রেট ইন দ্য ওয়ার্ল্ড (ওগ মানদিনো)
বইটি এর পাঠককে শুধু বুদ্ধিমানই করবে না, পাশাপাশি কর্মস্থলে কাজগুলো সহজ উপায়ে সম্পন্ন করার কৌশলও বলে দেবে। এ ছাড়া বইটি পড়া থাকলে সব ধরনের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে আর বেগ পেতে হবে না পাঠককে।
৫. দ্য কারেজ টু রাইট (রাল্ফ কেয়েস)
যাঁরা লেখালেখি করতে ভালোবাসেন, ‘দ্য কারেজ টু রাইট’ বইটি তাঁদের জন্য। লেখকদের জন্য বইটি দিকনির্দেশনামূলক কাজ করবে। ব্যাকরণ এবং বাক্যের গঠন উন্নয়ন করতে এ বইটি অদ্বিতীয়। বইটি লেখালেখির ক্ষেত্রে পাঠককে আরো সাহসী করে তুলবে।
৬. জাম্প স্টার্ট ইওর বিজনেজ ব্রেইন (ডগ হল)
নতুন একটি পণ্যের নকশা এবং একে বাজারে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে কৌশলগত উন্নয়নে বইটি বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখবে। এ ছাড়া টেকসই পণ্য তৈরিতে বিভিন্ন ধরনের দক্ষতা ও জ্ঞানও পাওয়া যাবে বইটিতে।
৭. কসমস (কার্ল সাগান)
কার্ল সাগান বইটিতে বেশ গভীর এবং বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে ধর্ম, দর্শন, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান। তাই খাবারের টেবিলে অথবা কোনো পার্টির আলোচনার ক্ষেত্রে ‘কসমস’ বইটির পাঠক যে মধ্যমণি হিসেবেই থাকবেন, তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
৮. ক্রিয়েটিভিটি ইনক : ওভারকামিং দ্য আনসিন দ্যাট স্ট্যান্ড ইন দ্য ওয়ে অব ট্রু ইন্সপায়ারেশন (এড কাটমুল, অ্যামি ওয়ালেস)
ব্যবসার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা যেকোনো প্রতিকূল পরিবেশ থেকে উত্তরণের উপায় হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু চাইলেই তো আর কারো মধ্যে সৃজনশীলতা ঢুকিয়ে দেওয়া যায় না। এর জন্য দরকার অনুশীলন। চলচ্চিত্রের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে সফল সৃজনশীলতার উদাহরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে বইটি। যাতে করে পাঠকদের মধ্যেও সৃজনশীলতার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
৯. ইউ আর নট ইওর ব্রেইন (জেফ্রে শোয়ার্জ)
মানুষের মধ্যে অনেকেই নিজেকে শৃঙ্খলার বেড়াজালে বন্দি করে রাখেন। শৃঙ্খলায় বন্দি এসব মানুষকে বইটি জানাবে তাঁরা কীভাবে নিজেদের মনকে নিয়ন্ত্রণ করবেন, যখন তাঁরা কোনো কিছু তৈরি করবেন অথবা সম্পর্কে জড়াবেন। সর্বোপরি শৃঙ্খলাবদ্ধ মানুষদের সামগ্রিক সাফল্যের জন্য বইটি বেশ কার্যকর।
১০. আউটলায়ার্স : দ্য স্টোরি অব সাকসেস (ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল)
যে লোকের বুদ্ধি বেশি, সেই জীবনে সফল হতে পারে—এমন ধারণা ভাঙতেই লেখা হয়েছে বইটি। বইটি পাঠককে জানাবে মানুষের সাফল্য তাঁর বুদ্ধির তারতম্যের ওপর নির্ভর করে না। মনস্তাত্ত্বিক বিবর্তনের কিছু তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বইটির মাধ্যমে ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল পাঠককে জানিয়েছেন জীবনে চটপটে ও সফল হওয়ার উপায়।
১১. দ্য পাওয়ার অব হ্যাবিট : হোয়াই উই ডু হোয়াট উই ডু ইন লাইফ অ্যান্ড বিজনেস (চার্লস ডুহিগ)
ভালো-মন্দ দুই ধরনের অভ্যাসই রয়েছে মানুষের জীবনে। কিন্তু ভালো বা মন্দ অভ্যাসের প্রভাব নিয়ে মানুষ বরাবরই উদাসীন। আর এই অভ্যাসগুলোকে একটু ঘেঁটে দেখতেই লেখা হয়েছে ‘দ্য পাওয়ার অব হ্যাবিট : হোয়াই উই ডু হোয়াট উই ডু ইন লাইফ অ্যান্ড বিজনেস’ বইটি। ভালো অভ্যাসগুলো কীভাবে আরো ভালো করা যায় এবং মন্দ অভ্যাসগুলোকে কীভাবে পরিবর্তন করা যায়, সে শিক্ষাই দেওয়া হয়েছে বইটিতে।
১২. থিংক লাইক অ্যা ফ্রিক : দি অথরস অব ফ্রিকোনমিকস অফার টু রিট্রেইন ইওর ব্রেইন (স্টিভেন ডি. লেভিট, স্টিফেন জে. ডাবনার)
নিজেকে বুদ্ধিমান প্রমাণ করতে গেলে প্রায়ই নিজের মতামত এবং স্বাভাবিক চিন্তাভাবনাকে নতুনভাবে উল্টো করে ভাবতে হয়। বইটিতে রয়েছে সে রকমই কিছু উদাহারণ। যার মাধ্যমে সাধারণ চিন্তাভাবনা থেকে সরে এসে একটু ভিন্নভাবে চিন্তাভাবনা করতে শিখবেন বইটির পাঠকরা।