‘মুনতাসীর মামুন ইতিহাস চর্চাকে আন্দোলনে রূপান্তরিত করেছেন’
বাংলাদেশের ইতিহাস চর্চায় অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন একটি অবিস্মরণীয় নাম। বিশিষ্ট এই ইতিহাসবিদ ও লেখকের ৬৫ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হলো এক ‘আনন্দ অনুষ্ঠান’।
জন্মবার্ষিকীর এই ‘আনন্দ অনুষ্ঠান’ আয়োজনের একটি বড় অংশ ছিল পাঁচ খণ্ডে প্রকাশিত ‘মুনতাসীর মামুন রচনাবলি’ বইয়ের প্রকাশনা উৎসব।
গতকাল মঙ্গলবার বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু করে রাত অবধি অনুষ্ঠিত হয় এই ‘আনন্দ অনুষ্ঠান’।
বরেণ্য চিত্রশিল্পী হাশেম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই আনন্দ অনুষ্ঠানে শিল্পী-সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক ব্যক্তিবর্গ, শিক্ষক-ছাত্রসহ সর্বস্তরের মানুষ ফুলের শুভেচ্ছা জানান প্রিয় লেখক অধ্যাপক মুনতাসীর মামুনকে।
আয়োজনের শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান বলেন, ‘সাধারণ মানুষের দুঃখের, বিপ্লবের সঙ্গী হয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন মুনতাসীর মামুন। তিনি এখনো আপসহীনভাবে লিখে যাচ্ছেন ইতিহাসকে বাঁচিয়ে রাখতে।’ মুনতাসীর মামুনের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদান করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘মানুষের কাছে ইতিহাসকে পড়ার উপযোগী করে তুলেছেন মুনতাসীর মামুন। তিনি ইতিহাস চর্চাকে আন্দোলনে রূপান্তরিত করেছেন। শুধু ছাত্র নয়, গোটা সমাজকে তিনি আলোকিত করেছেন। এটা মুনতাসীর মামুন ছাড়া আর কেউ করতে পারেননি।’
তাঁকে সর্বক্ষণ নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি জানান শাহরিয়ার কবির।
অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে মুনতাসীর মামুন বলেন, ‘আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান। যৌবনে ভাগ্যে বিশ্বাস করতাম না, এখন করি। আমাকে চারবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, মুরতাদ ঘোষণা করা হয়েছে চারবার। আমার মনে হয়, আমার ওপর সাধারণ মানুষের দোয়া আছে। আমি সামান্য শিক্ষক, সামান্য লেখক। যে কাজটি আমি ও আমার পরিবার এখনো করে যাওয়ার চেষ্টা করছি, তা হচ্ছে মানুষের সেবা।’
আনন্দ অনুষ্ঠানে মুনতাসীর মামুনের রচনাবলি ছাড়াও তাঁকে নিয়ে লেখা বইও প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে অধ্যাপক মাহবুবর রহমানের লেখা ‘মুনতাসীর মামুনের স্থানীয় ইতিহাসচর্চা’, আহমেদ মাহফুজুল হক সম্পাদিত ‘৬৫-তে মুনতাসীর মামুন’, চৌধুরী শহীদ কাদেরের ‘মুনতাসীর মামুন কীভাবে আমাদের হলেন’, আহমেদ শরীফ ও আহমেদ মাহফুজুল হক সংকলিত ও সম্পাদিত ‘মুনতাসীর মামুনের বই’ এবং মুনতাসীর মামুনের নিজের লেখা ‘হারিয়ে যাওয়া ঢাকার খোঁজে’।