উপন্যাস পর্ব ৮
বাবা আছে বাবা নেই
ছিমছাম তিন রুমের একটি বাসা। দুটি থাকার ঘর। অপরটি বসা আর খাওয়া-দাওয়ার। খালাম্মা খালু আর একমাত্র মেয়ে। মেয়েটির নাম টিনা।
বাকিউল আমাকে হাসপাতালে রেখে অফিসে গিয়েছিল। সুযোগ বুঝে আমি খালাম্মাদের সাথে কেটে পড়লাম। টিনাও আমাকে আপন করে নিয়েছে। সে বুঝতে পেরেছে বিবাহিত জীবনে একটি মেয়ের দুঃখ কিসে।
সামনের ঘরে বসে আছি। খালুজান বাসায় নেই। তাঁর সাথে এখনো আমার দেখা হয়নি। শুনেছি তিনি বেশ রাশভারী লোক। টিনা বিছানায় শোয়া। সিজার হওয়াতে তার হাটা-চলার বেশ কষ্ট হচ্ছে। খালাম্মা টিনার পাশে আছেন।
বুঝতে পারলাম পুরো সংসার খালাম্মা আর টিনাই সামলায়। টিনা অসুস্থ হওয়াতে খালাম্মাকে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। তাই সংসারের কাজে আমিও হাত লাগাচ্ছি।
এতে খালাম্মাও খুশি।
সন্ধ্যে পেরিয়েছে ঘণ্টাখানেক আগে। খালুজান বাসায় ফিরলেন। আমি পা ছুয়ে সালাম করলাম। তিনি টিনার কাছে ছুটে গেলেন। খালাম্মাও সেদিকে গেল। আর আমি থালা-বাটি ধোয়া আর তরকারি কুটা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।
কাজের ফাকে হঠাৎ বাকিউলের কথা মনে পড়ল।
বাকিউল নিশ্চয় অফিস থেকে সোজা হাসপাতালে ফিরেছে। ফিরে আমার বেড শূন্য দেখে অবাক হয়েছে। পাশের বেডে, ডাক্তার নার্সকে জিজ্ঞেস করেছে। কেউ কিছু বলতে পারেনি। উত্তর পেয়েছে- সরকারি হাসপাতাল কে কার খবর রাখে। হয়তো সে রিপোর্টও করেছে। কিন্তু ফল কিছু হবে কি না সে বিশ্বাস রাখতে পারেনি।
আচ্ছা বাকিউল কি থানা পুলিশ করবে? ভাবনাটা মাথার ভেতর ঘুরপাক খাচ্ছে। থানা পুলিশ করলে তো আমাকে নিয়ে আবার লঙ্কাকাণ্ড বেঁধে যাবে। বাকিউলের যা স্বভাব সে ওসব ঝামেলায় নাও যেতে পারে। ইচ্ছে হলো তো নতুন কোনো অবলা মেয়েকে টার্গেট করল। তারপর ছলে বলে কৌশলে ঘরে তুলে নিল।
তবে আমার পালিয়ে যাবার ঘটনাটা বাকিউল আমার জন্মদাতা মৌলানা শরাফত খানকে নিশ্চয় জানাবে।
তাতে আমার ভয় নেই। মৌলানা শরাফত খান যুদ্ধাপরাধের কারণে নিজেই পালাবার পথ খুঁজে পাবে না।
খালাম্মা এলো।
এ বাড়িতে এসে তোমার তো কষ্ট বেড়ে গেল রাবেয়া।
না খালা। কি যে বলছো। আমি তো নরক থেকে স্বর্গে এলাম। কষ্ট নিয়ে সোনার খাটে থাকার চেয়ে রাস্তার পাশে বস্তিতে সুখের ঘুম অনেক ভালো।
রাবেয়া তুমি তো দেখছি বেশ জ্ঞানী মানুষের মতো কথা বলছ। তোমার পড়ালেখা কদ্দুর। খালাম্মা বলল।
নাইন থেকে টেন এ উঠতাম। আর এ সময়েই ঘটনাটা ঘটল।
খালুজান এলেন।
মেয়েটাকে তো তুমি দিব্যি কাজে লাগিয়ে দিয়েছ। খালাম্মাকে বলল খালুজান।
চুপ করে রইলাম।
কী আর করব? খালাম্মা বলল।
টিনার জন্যই তো। থামল খালাম্মা।
কী নাম তোমার মা? খালুজান বলল।
রাবেয়া। বললাম আমি।
তিনি আর কিছুই জিজ্ঞেস করলেন না। নিশ্চয় খালাম্মার কাছ থেকে বাকি ইতিহাস শুনেছেন।
তৃতীয় দিনে খবরের কাগজে রিপোর্ট বেরুল। আমার ছবিসহ। হাসপাতাল থেকে রুগীর পলায়ন। সেখানে উল্লেখ থাকল পলাতক রুগী মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। কাগজটি খালুজানই এনেছেন। আঁতকে উঠলাম।
ঘটনাটা যেহেতু খবরের কাগজ পর্যন্ত গড়াল তাহলে নিশ্চয় থানা পুলিশও হয়েছে। কলজের ভেতর একটা ভয় ঢুকে গেল।
টিনার পাশে বসে কথা বলছিল খালাম্মা। ছুটে গিয়ে খালাম্মার পাশে গেড়ে বসলাম।
কিছুই হবে না। তুমি টেনশান করো না। এখানে তোমাকে কেউ দেখতে আসছে না। আর আমরাও গায়ে পড়ে কাউকে বলতে যাচ্ছি না। বলল খালাম্মা।
তারপরও আমার ভেতর থেকে ভয়টা যাচ্ছে না।
তোমার কিছু হলে তো আমরা আছি, নাকি? বলল টিনা।
চুপচাপ চেয়ে থাকলাম। চোখ থেকে জল গড়িয়ে পড়ল।
দুই মাস পেরুতে চলল। টিনাদের বাসায় থাকছি। খাচ্ছি। পরিবারের একজন হয়ে সব কাজে হাত দিচ্ছি। টিনার বাবা আজমল সাহেব সরকারি চাকুরে ছিলেন। রিটায়ার্ড করেছেন বছর খানেক হলো। এখন একটি প্রাইভেট ফার্মে জয়েন করেছেন।
বেতন, সুযোগ সুবিধা তেমন নেই বললেই চলে। পেনশানের টাকা আর যা কিছু প্রাইভেট ফার্ম থেকে পায় তা দিয়ে টেনেটুনে চলে যাচ্ছে। টিনার স্বামী মাঝে মধ্যে সৌদি থেকে টাকা পাঠায়। ও থেকে কিছুটা সংসারের কাজে লাগায় টিনা। আজমল সাহেবের ঘানিটানা সংসারে আমার নিজেকে আপদ বলেই মনে হচ্ছে। তারপরও আমি নিরূপায় হয়ে ঠাঁই নিয়েছি। টানাপোড়েনের সংসারে আমারও অংশীদার হতে খুব ইচ্ছে হয়। কিন্তু পারি না। কী করার আছে আমার? গৃহস্থালীর ধোয়া মোছা, কাটাকুটির কাজ ছাড়া। ওসব করেও আমি চাইছিলাম দুটো টিউশনি করি। হাত খরচের টাকাটা তো উঠে আসবে। খালাম্মার কানেও তুলেছিলাম সে কথা। খালাম্মা বলেছিলেন সে দেখা যাবে।
ওখানেই থেমে গিয়েছিলাম। কিন্তু সপ্তাহ না পেরুতেই খালাম্মা টিউশনির ব্যবস্থা করে ফেললেন।
একদিন বাইর থেকে ফিরেই আমাকে ডাকতে ডাকতে ভেতর ঘরে এলো।
বললেন রাবেয়া তোমার টিউশনির ব্যবস্থা হয়ে গেছে।
কী! বেশ অবাক হয়ে চিৎকার দিয়ে বললাম।
হ্যাঁ। খালাম্মা বলল।
জামা-কাপড় গোছানো বাদ দিয়ে আমি খালাম্মাকে জড়িয়ে ধরলাম।
শোন রাবেয়া। এতটা উল্লাসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। টিউশনি পাওয়া বড় কথা নয়। বরং সঠিক ভাবে পড়িয়ে কাজটা টিকিয়ে রাখাটাই বড়।
খালাম্মা।
হু।
আমার ওপর ভরসা রাখতে পারেন।
ঠিক আছে। তোমাকে কাল বিকেলে আমি সামিয়াদের বাসায় নিয়ে যাব ওরা ভাইবোন দুজন। একজন ফাইভে আর একজন টুতে।
নো প্রবলেম খালাম্মা।
খালাম্মার সাথে কথা বলতে বলতেই হঠাৎ আমার পেট গুলিয়ে বমি এলো। দৌঁড়ে বাথরুমে গেলাম। পেটের ভেতরটায় বেশ মোচড়াল। কিন্তু তেমন বমি বেরুল না। ইতিমধ্যে টিনাও ছুটে এসেছে।
ক্ষাণিকপর বাথরুম থেকে বেরুলাম।
খালাম্মা লেবু কেটে আনল। জল চাইলাম। টিনা জগ থেকে জল ঢেলে দিল।
শো।
কিছুক্ষণ শুয়ে থাক। এখন আর কোনো কাজ করতে হবে না। খালাম্মা বলল।
বিছানায় শুলাম।
টিনা পাশে বসে মাথায় হাত বোলাচ্ছে। খালাম্মাও পাশে বসল।
হঠাৎ বমি হলো কেন? উল্টো-পাল্টা কিছু খেয়েছিস? বলল খালাম্মা।
না। তেমন কিছু তো খাইনি খালাম্মা।
তাহলে?
টিনা উঠে গিয়ে একটা ছোট প্লাষ্টিকের কৌটা নিয়ে এলো। ছিপি খুলে আমার হাতে কী যেন দিল।
কী ওটা? বললাম আমি।
মুখে দাও। তেঁতুল। বলল টিনা।
তেঁতুলের একদানা কোয়া মুখে পুরলাম।
ডাক্তার ডাকব? বলল খালাম্মা।
না খালাম্মা। সেরে যাবে।
রাতে খাবার পরও দুবার বমি হতে চাইল। শেষবার যা খেয়েছিলাম তার সবি মনে হয় বেরিয়ে গেল।
খালাম্মা উদ্বিগ্ন হলেন। ব্যাপার কী রাবেয়া? বলল খালাম্মা।
ঠিক বুঝতে পারছি না। খালাম্মা।
হুঁ।
আমার কৃমির সমস্যা আছে। বছরে কয়েকবারই কৃমির ঔষধ খেতে হয়। এখনো মনে হয় পেটের কৃমিগুলো উতলা হয়ে উঠেছে।
সকালেই ডাক্তারের কাছে যাব।
টিনা। খালাম্মা ডাকল।
জ্বি আম্মু।
কাল সকালে রাবেয়াকে ডাক্তার নার্গিসের কাছে নিয়ে যাবে।
আচ্ছা আম্মু।
না খালাম্মা। ডাক্তারের কাছে যেতে হবে না। আমি ডিসপেনসারি থেকে ওষুধ নিয়ে নেব।
না জেনে ওষুধ খাওয়া ঠিক না। যা বললাম তাই কর।
কাল বিকেলে কিন্তু সামিয়াদের বাসায় যেতে হবে।
জ্বি খালাম্মা।
টিনা আর আমি শুয়ে পড়েছি। খালাম্মা চলে গেল।
টিনা! ডাকলাম আমি।
হুঁ।
ঘুম আসছে?
আসি আসি করছে। কেন?
এমনি!
আচ্ছা তোমাকে একটা প্রশ্ন করি। কিছু মনে করো না।
হ্যাঁ করো।
ভাইয়া দেখি তেমন ফোন টোন করে না। মাঝে মধ্যে শুনি টাকা পাঠিয়েছে।
তুমি ঠিকই ধরেছ। তেমন কথা হয় না। আর প্রয়োজন ছাড়া আমারও তেমন কথা বলতে ইচ্ছে করে না।
কেন? স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তো কত কথাই থাকে।
হ্যাঁ। থাকে। যদি তেমন স্বামী-স্ত্রী হয়।
মানে?
মানে একদম সহজ। তার আগে বল তুমি কেন স্বামীর ঘর ছেড়ে পালিয়ে এসেছ?
আমার মুখে কুলপ এঁটে দেয় টিনা। আর কোনো জবাব দিতে পারি না। বুঝতে পারি টিনারও ইচ্ছের বিরুদ্ধে বিয়ে হয়েছে। স্বামী নামের একটা শিকল গলায় প্যাঁচিয়ে আছে। যেকোনো মুহূর্তে টান দিলেই তার কাছেই ছুটে যেতে হবে। কোনো অজুহাত সেখানে অচল। এটাই আমাদের সমাজ।
এটাই বাস্তবতা।
টিনা। টিনা। ডাকলাম বারবার।
টিনা ঘুমিয়ে পড়েছে, থাক।
আমিও পাশ ফিরে শুলাম। এলোমেলো অনেক কিছুই মাথায় গিজগিজ করছে।
পরের দিন বিকেল। খালাম্মাসহ সামিয়াদের বাসায় এসেছি।
খালাম্মারা যে বিল্ডিংয়ে থাকছেন তার ঠিক দুই বিল্ডিং পর। ছতলা বিল্ডিংয়ের দোতলায়। ছিমছাম সুন্দর গোছানো একটি ড্রইং রুমে আমি বসে আছি। খালাম্মা ভেতর দিকে গেলেন।
ক্ষণিক পরই টের পেলাম পর্দা নড়ছে। কে যেন উঁকি দিয়ে গেল। টেবিলের পাশে বাসি খবরের কাগজ মোড়ানো আছে। হাতে নিয়ে পড়ছি। সময়টা কেটে যাবে।
পর্দার ওপাশে কারা যেন ঘুর ঘুর করছে। সুযোগ বুঝে উঁকি দিচ্ছে।
সামিয়া।
ভেতর থেকে ওর মায়ের ডাক পড়ল। অমনি দুজনের দৌঁড়ে যাওয়ার শব্দ পেলাম। কিছুটা সময় কেটে গেল।
খালাম্মা সামিয়ার মাকে নিয়ে হাজির হলো। সাথে সামিয়া ও তার ছোট ভাই। নামটা এখনো জানা হয়নি। আমি দাঁড়িয়ে সামিয়ার মাকে সালাম দিলাম। তিনি ওদের দুজনকে পড়ার টেবিলে বসিয়ে দিলেন।
বলল রাবেয়া তোমার ছোট ভাইবোনের মতো করেই দেখ। শুনেছি তুমি পড়াশোনায় বেশ ভালো। সুতরাং আমাকে নতুন করে কিছু শিখিয়ে দিতে হচ্ছে না।
সামিয়ার মা থামলেন। তিনি ইতিমধ্যে খালাম্মার কাছ থেকে আমার নামও জেনে নিয়েছেন।
তোমার কিছু বলার আছে? সামিয়ার মা আমাকে বলল।
না আন্টি। বললাম আমি।
রাবেয়া আমার মেয়ে। আমি যা বলি তা। খালাম্মা বলল।
জ্বি আন্টি। খালাম্মা ঠিকই বলছেন।
চলুন আমরা যাই। ওরা বই খাতা খুলুক। খালাম্মা সামিয়ার মাকে নিয়ে পাশের ঘরে গেল।
তোমার নাম কী? সামিয়ার ছোট ভাইটিকে জিজ্ঞেস করলাম।
লিদয়।
কী বললে?
লিদয়।
ওর কথা শুনে আমার মুখ ফসকে হাসি বেরিয়ে গেল। লিদয় নয় বলো হৃদয়। রি-দয়। ওকে মুখে মুখে নাম শেখাচ্ছি। সামিয়া হাসছে। সামিয়া ও হৃদয়। দুজনের চেহারা বেশ মিষ্টি।
সামিয়া তুমি তো ফোর থেকে ফাইভে উঠেছ?
জ্বি। তুমি আমার নাম জানো? সামিয়া বলল।
হ্যাঁ।
কে বলেছে?
তা তো বলা যাবে না।
কেন?
আচ্ছা বলছি শোন। আমার খালাম্মাই বলেছে।
আমরা তোমাকে কী ডাকব।
কী ডাকবে? এটা তো একটা চিন্তার বিষয়।
চিন্তার বিষয় কেন? সামিয়ার মুখে শুধু প্রশ্ন।
এমনি। দুষ্টুমি করলাম। তোমরা আমাকে আপু ডেকো।
আচ্ছা।
হৃদয়।
জ্বি আপু।
তোমার নাম বল।
লিদয়।
লি নয়। রি। বলো রি।
রি।
পুনরায় বমি বমি ভাব হচ্ছে। এখন এমন অবস্থা।
সামিয়া।
জ্বি আপু।
তোমাদের বাথরুমটা কোন দিকে?
হাতের ইশারাতেই সামিয়া দেখিয়ে দিল। ওই যে ওটা।
চেয়ারের হাতলে ওড়নাটা রেখেই বাথরুমে ঢুকলাম।
মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে বুক চেপে ধরলাম। বমি গলায় আটকে আছে। নিচেও নামছে না। বেরিয়েও পড়ছে না। বেশ কিছুক্ষণ বসে থাকার পর হালকা বমি হল। কিছুটা স্বস্তি লাগছে। পড়ার ঘরে কে যেন এসেছে। সামিয়ার বাবা হতে পারে। ওদের সাথে কথা বলছে। ওড়না রেখে এসেছি চেয়ারের হাতলে। বেরুই কী করে। মহা ফ্যাঁসাদে পড়লাম তো।
দরজা খুললাম। উঁকি দিলাম। একটা ছেলে বসে আছে। পেছন থেকে ঠিক বয়স অনুমান করতে পারছি না।
সামিয়া।
জ্বি আপু।
ছেলেটি হঠাৎ চমকে উঠল। এ ঘরে অন্য কেউ আছে সে বুঝতে পারেনি।
আমার ওড়নাটা আনতো।
দরজার আড়াল থেকেই বললাম।
সামিয়া চেয়ারের হাতল থেকে ওড়নাটা নিল।
কে? ছেলেটি সামিয়ার কাছে জানতে চাইল।
আমাদের আপু। আজ থেকে পড়াচ্ছে। সামিয়া বলল।
ও। ছেলেটি উঠে দাঁড়াল।
সালাম দিলাম।
ভালো আছেন? বলল ছেলেটি।
জ্বি।
আর কথা বাড়াল না। পর্দা ঠেলে বেরিয়ে পড়ল।
কে? সামিয়াকে বললাম আমি।
আমার ছোট কাকা।
ও। আচ্ছা।
বই খাতা নিয়ে সামিয়াকে পড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। হৃদয় তার নাম শেখা নিয়েই ব্যস্ত।
সামিয়ার মা ট্রেতে করে নাস্তা নিয়ে এলো। নুডুলস। বিস্কিট আর চা টেবিলে রেখেই তিনি চলে গেলেন। সামিয়ার কাকার উপস্থিতিতে ওড়না ছাড়া যে লজ্জাটা পেলাম সেটা মাথা থেকে যাচ্ছে না।
মোটামুটি উঁচা-লম্বা। উজ্বল শ্যামবর্ণ। চেহারাটা ঠিক মনে করতে পারছি না। প্রথম দিনেই এ রকম অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়ব ভাবতে পারি নি। থাক ওসব।
অতকিছু মাথায় নিয়ে কাজ নেই। আমার টিউশনি দরকার। হাত খরচের টাকা দরকার। প্রতিশোধ নেওয়া দরকার। প্রতিশোধ।
টিউশনি থেকে ফেরার পথে ডিস্পেনসারি থেকে ওষুধ নিয়ে এসেছি। খাচ্ছি নিয়মিত। কিন্তু বমি ভাব কমলেও একেবারে সেরে যাচ্ছে না।
(চলবে)