অবিলম্বে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তি দাবি করছি : আসিফ নজরুল
মুন্সীগঞ্জের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের মুক্তি দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, এই ঘটনাটিকে আমি অসহিষ্ণুতার একটি বড় উদাহরণ হিসেবে দেখছি। একইসাথে ‘একাডেমিক ফ্রিডম চর্চা’র পরিপন্থী বলেও মনে করছি। আমরা শিক্ষকেরা ক্লাসরুমে যার যা জ্ঞান আছে, চিন্তা আছে তা নিয়ে খোলা আলোচনা করি। এখন যদি কেউ সেইসব কথা রেকর্ড করে মামলা দিয়ে দেয়, তাহলে তো আর একাডেমিক ফ্রিডমের বিষয়টাই থাকবে না। এটি খুবই একটি দুঃখজনক নজির স্থাপন করা হয়েছে। আমি অবিলম্বে শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের মুক্তি দাবি করছি।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভয়েস অব আমেরিকা বাংলাকে এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এমনটি বলেছেন।
ড. আসিফ নজরুল আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের সমাজকে সমস্ত ব্যাপারে ইতিহাস চর্চার ব্যাপারে, ধর্ম চর্চার ব্যাপারে, রাজনৈতিক চর্চার ব্যাপারে আর সহনশীল হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ বিনোদপুর রামকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির মানবিক শাখার ক্লাস নেওয়ার সময় হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল ‘ধর্ম অবমাননা’ করেছেন বলে অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় ২২ মার্চ মামলা করেন স্কুলের অফিস সহকারী মো. আসাদ। সেদিনই তাঁকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। ২৩ মার্চ তাঁকে আদালতে হাজির করলে আদালত আসামিকে জেল হাজতে পাঠায়।
গত ৪ এপ্রিল মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামির জামিনের জন্য ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন তার আইনজীবী। সেদিন মামলাটিতে আসামির জামিন শুনানি আগামী ১০ এপ্রিল ধার্য করেন মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ।
অপরদিকে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের নিঃশর্ত মুক্তি চেয়েছেন দেশের ১৮ বিশিষ্ট নাগরিক। গত বুধবার এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘আমরা হৃদয় চন্দ্র মণ্ডলের নিঃর্শত মুক্তি দাবি করছি। আর যে কিশোর ছাত্ররা মৌলবাদী চিন্তা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে অপমান করে পুলিশে সোপর্দ করেছে তাঁদের মধ্যে মানবিক চেতনার বিকাশ ঘটানোর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।’