আগের পুলিশের সঙ্গে বর্তমান পুলিশের অনেক পার্থক্য : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আপনারা ১৫-২০ বছর আগে যে পুলিশ দেখে ছিলেন সেই পুলিশের সঙ্গে বর্তমান পুলিশের অনেক পার্থক্য রয়েছে। এরা যেমন জীবন উৎসর্গ করে, তেমনি তাদের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ক্রাইম ডিটেকশনের জন্য সময় নেয় না।
আজ শুক্রবার রাতে পুলিশ লাইনস মাঠে চতুর্থ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সাইবার ক্রাইম আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে গেছে। এ ক্রাইম এত বেশি বিস্তার লাভ করেছে যে, সবাই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সাইবার ক্রাইম ইউনিট গঠন করেছি। আমরা সবকিছুই করেছি জনগণের সেবা দেওয়ার জন্য। জনগণকে শান্তিতে রাখার জন্য।’
জিএমপির কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ।
অনুষ্ঠানে গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান ও পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলমসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
২০০৯ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ৮২ হাজার ৫৮৩ জনকে পুলিশে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘পুলিশের পাশাপাশি শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত অন্য বাহিনীর সদস্যদের শক্তিশালী করে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য আমরা কাজ করছি।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘১৯৭৫ সালে রাজারবাগে পুলিশের উদ্দেশে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, তোমাদের জনণের পুলিশ হতে হবে। তোমরা বৈদেশিক উপমহাদেশীয় কোনো শাসনকর্তার পুলিশ নও। তোমরা এ দেশের পুলিশ। তোমাদের এ দেশে মানুষের পাশে থাকতে হবে। আজকে সেই জায়গাতেই পুলিশ আসছে।’
মন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু নারী পুলিশ গঠন করার জন্য আমাদের আহ্বান করে গেছেন। আমাদের বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আজ নারীদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি নারী পুলিশ গঠনের জন্য আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা নারী পুলিশ গঠন করেছি এবং সেখানেও আমরা সফলতার মুখ দেখছি। সেজন্যই আমার এগিয়ে যেতে পেরেছি।’
অনুষ্ঠানে আইজিপি বেনজির আহমেদ বলেন, ‘এ দেশের অর্থনীতির ফুসফুস হচ্ছে গাজীপুর। হাজার হাজার ইন্ডাস্ট্রি এবং লাখ লাখ শ্রমিক এখানে কাজ করছে। আমরা প্রতি বছর যে ১৫ মিলিয়ন ডলারের গার্মেন্ট প্রোডাক্ট রপ্তানি করছি, তার বেশিরভাগই এ অঞ্চল থেকে রপ্তানি হয়ে থাকে।’
এর আগে বিকেলে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। হাতি, ঘোড়ারগাড়ি, মোটরবাইকসহকারে শোভাযাত্রাটি পুলিশ লাইনসে এসে শেষ হয়। এখানে বেলুন, পায়রা উড়িয়ে এবং কেক কেটে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করা হয়।
আলোচনা সভা শেষে রাতে জনপ্রিয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।