‘আমাদেরও পরিবার আছে, সংসার চালামু ক্যামনে’
‘ভাই আমাদেরও পেট আছে, পরিবার আছে। সংসার চালামু ক্যামনে? সবই তো চলছে, আমাদের দোষ কী?’—আজ বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এনটিভি অনলাইনকে এসব কথা বলেন রাইড শেয়ারিং-এর মোটরসাইকেল চালক শফিউল আলম।
শফিউল আলম বলেন, ‘চাকরি নেই, ঋণ করে একটি মোটরসাইকেল কিনেছি। এটাই আমার পরিবারের একমাত্র ভরসা। এখন গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় না খয়ে মরতে হবে।’
আরেক চালক সেলিম বলেন, ‘সরকার গণপরিবহণ চালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। তাহলে, আমাদের অপরাধ কোথায়? আমার পরিবার নিয়ে বাঁচব কীভাবে?’
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন মোটরসাইকেল চালকেরা। তাঁরা দ্রুত এ পরিষেবা চালুর দাবি জানান।
একে একে জড়ো হয়ে কয়েকশ বাইকার রাইড শেয়ারিং চালু এবং মোটরসাইকেল চালকদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশের মামলার প্রতিবাদ জানান।
আন্দোলনকারী একজন বাইকার বলেন, ‘পুলিশ বাইকের পেছনে কাউকে পেলেই তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকার মামলা দিচ্ছে। কোনো কিছু বলার সুযোগ দিচ্ছে না। আমরা এর প্রতিবাদ করছি।’
রামপুরা থেকে মো. বাবুল মিয়া বলেন, ‘পেটের দায়ে বাইক চালাই। আমরা তো আর চুরি করি না। আয় না হলে চলব কী করে। কে চালাবে আমাকে, আমার পরিবার-পরিজনকে? সরকার কি কোনো সহায়তা দেবে?’
মিরপুর থেকে আসা সাকিব খান বলেন, ‘আমরা চাই রাইড শেয়ারিং আবার চালু হোক। সবকিছু চলছে, আমাদেরটা বন্ধ করে কী লাভ?’
সম্প্রতি করোনার সংক্রমণ রোধে ১৮টি নির্দেশনা দেয় সরকার। এর আলোকে গণপরিবহণে ৫০ শতাংশ আসন খালি রেখে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আগামী দুই সপ্তাহের জন্য মোটরসাইকেলের রাইড শেয়ারিং সার্ভিস বন্ধ করার নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ কর্পোরেশনের (বিআরটিএ)।
নির্দেশনায় বলা হয়, করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত (আপাতত দুই সপ্তাহ) রাইড শেয়ারিং সার্ভিসে মোটরসাইকেলে যাত্রী পরিবহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো।
গত ২৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়। এতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা, গণপরিবহণে ধারণক্ষমতার ৫০ শতাংশ যাত্রী পরিবহণ ও গণজমায়েত নিষিদ্ধের কথা জানানো হয়।