ইউপি নির্বাচনের জেরে ৮০০ লাউগাছ কেটে সাবাড়
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলায় রাতের আঁধারে প্রায় ৮০০ লাউগাছ গোড়া থেকে কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। অভিযোগ উঠেছে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের বিরোধের জেরে এমন কাজ করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের জামুবাড়ী দোলাপাড়ার উন্তারবিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে আজ বৃহস্পতিবার সকালে এ দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে পড়েন চাষিরা। এ ঘটনায় থানায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উন্তারবিলের উঁচুপাড়ের বিশাল এলাকা জুড়ে মজিবর রহমান, মেনাজুল ইসলাম, লাবলু মিয়া, সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষক যৌথভাবে লাউয়ের চাষ করেন। এর মধ্যে গাছগুলোতে হাজার হাজার লাউ ধরেছে। কিছুদিন পরেই বাজারে লাউ বিক্রির স্বপ্ন দেখছিল চাষিরা।
এর মধ্যে গতকাল রাতে একই এলাকার দোলাপাড়ায় বর্তমান ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শহীদুল হক মানিকের একটি নির্বাচনী কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই কর্মীসভায় উপস্থিত ছিলেন না লাউ চাষি মজিবর রহমান, মেনাজুল ইসলাম, লাবলু, সাইফুল, ওয়াজেদুল, কাদের মিয়া ও তাজেরুল ইসলাম। একই সময় ওই ইউনিয়নের হাড়িভাঙ্গা এলাকায় সম্ভাব্য অপর প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম সরকার সংগ্রামের কর্মীসভায় এসব চাষিরা অংশ নেন।
চাষিদের অভিযোগ, মানিকের কর্মীসভায় যোগ না দেওয়ায় প্রতিপক্ষের দুর্বৃত্তরা রাতের অন্ধকারে তাদের সর্বনাশ করতে প্রায় ৮০০ লাউয়ের গাছ গোড়া থেকে কেটে দিয়েছে।
লাউচাষিদের একজন মজিবর রহমান মাস্টার। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘আজ সকালে খবর পাই কে বা কারা লাউগাছগুলো কেটে দিয়েছে। আগের দিন মানিক চেয়ারম্যানের কর্মীসভায় আমরা উপস্থিত না থাকায় আমাদের নামে সমালোচনা করা হয়। এক পর্যায়ে আমাদের ক্ষতি করবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। আমাদের ধারণা, মানিক চেয়ারম্যানের ইন্দনে তাঁর ভাড়াটে লোকজন রাতের অন্ধকারে লাউগাছগুলো কেটে দিয়েছে। এ ঘটনায় আমরা থানায় অভিযোগ করব।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান শহীদুল হক মানিক বলেন, ‘আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে একটি পক্ষ ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। দোলাপাড়া এলাকায় আমার কর্মীসভা ছিল। কিন্তু ওই গ্রামে আমার সমর্থক কম। লাউয়ের গাছ কে বা কারা কেটেছে আমার জানা নেই। আমার নামে অপবাদ দিয়ে ভোটারদের মধ্যে দুর্নাম রটানো হচ্ছে।’
এদিকে, সম্ভাব্য অপর প্রার্থী আশরাফুল ইসলাম সরকার সংগ্রাম বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত লাউচাষিরা আমার ভক্ত-সমর্থক। মানিক চেয়ারম্যানের কর্মীসভায় উপস্থিত না হওয়ায় প্রকাশ্যে তাদের (চাষি) হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে শুনেছি। পরদিন সকালে তারই প্রমাণ মেলে। আমার কয়েকজন সমর্থকের রোপণ করা শত শত লাউ গাছ কেটে সর্বনাশ করা হয়।’
বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমার বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পাওয়া গেলে সরেজমিন তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’