ইয়াবা ঢুকিয়ে ফাঁসানো : ৩ পুলিশসহ চারজন রিমান্ডে
টাঙ্গাইলের সখিপুরে পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে ফাঁসানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তিন পুলিশ সদস্যসহ চারজনের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার বিকেলে পুলিশের পক্ষ থেকে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে সখিপুর আমলী আদালতের বিচারক শামছুল আলম রিমান্ড শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ও মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার গুলরা গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে রিয়াজুল ইসলাম, পুলিশ কনস্টেবল ও ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার মোজাটি গ্রামের আক্তারুজ্জামানের ছেলে রাসেলুজ্জামান, পুলিশ কনস্টেবল ও কিশোরগঞ্জের কটিয়াদি উপজেলার ঢুলদিয়া গ্রামের জীবন সাহার ছেলে গোপাল সাহা এবং পুলিশের সোর্স ও মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল নয়াপাড়া গ্রামের হাসান মিয়া।
এদিকে ওই তিন পুলিশ সদস্য এবং পলাতক আবদুল হালিম ও তোজাম্মেল হকসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশের একাধিক সূত্র।
অপরদিকে পুলিশের পাঁচ সদস্য ও দুই সোর্সসহ মোট সাতজনকে আসামি করে সখিপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আইনুল হক বাদী হয়ে মামলা করেছেন।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের বাঁশতৈল ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা পাশের উপজেলা সখিপুরের ভাতকুড়াচালার ফরহাদ মিয়ার ছেলে বজলুকে দীর্ঘদিন ধরে নিরীহ মানুষকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর জন্য নানা প্রলোভন ও চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এতে বজলু রাজি না হওয়ায় তাঁকে নানা ভয়ভীতি দেখান তাঁরা। এর ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বাঁশতৈল ফাঁড়ির ইনচার্জ রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে সাদা পোশাকে কনস্টেবল গোপাল সাহা, রাসেলুজ্জামান, তোজাম্মেল ও হালিম এবং সোর্স হাসান মিয়া ও সখিপুরের রাজাবাড়ী গ্রামের আল আমিন সাধারণ মানুষকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর জন্য বজলুকে চাপ প্রয়োগ করেন। এ সময় বজলু রাজি না হওয়ায় তাঁর পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। বিষয়টি স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে তারা পুলিশ সদস্যদের আটক করে রাজাবাড়ী বাজারে নিয়ে যান।
এ সময় কনস্টেবল তোজাম্মেল ও হালিম এবং সোর্স আল আমিন পালিয়ে যান। পরে উত্তেজিত জনতা বাকি চারজনকে পিটুনি দিয়ে একটি কক্ষে আটকে রাখেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে মানুষকে ফাঁসানোর জন্য আনা ২৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সখিপুর ও মির্জাপুর থানা পুলিশ। তারা দোষী পুলিশ সদস্য ও সোর্সদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ্বাস দিলে শান্ত হয় উত্তেজিত জনতা।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ‘তারা ঘটনা ঘটিয়েছে তখন কিন্তু পুলিশ সদস্য হিসেবে ঘটায়নি। পুলিশের নিয়ম কানুন মেনে তারা কিছুই করেনি। ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্যে তারা সেখানে গিয়েছিল। তাই তারা যে অপরাধ করেছে অন্য সব অপরাধ ও অপরাধীর মতোই বিবেচিত হচ্ছে। পুলিশ অপরাধ করলেও তার কোনো ছাড় নয়। আমরা তেমন দৃষ্টান্তই স্থাপন করছি।’