করোনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান
করোনাজনিত পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিমসটেকভুক্ত দেশগুলোকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (এসএএনইএম) আয়োজিত ‘বে অব বেঙ্গল ইকোনমিক ডায়ালগ ২০২১ : পোস্ট কোভিড চ্যালেঞ্জেস ইন দ্য বে অব বেঙ্গল রিজিয়ন’ শীর্ষক চার দিনব্যাপী ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিমসটেক একটি লাগসই ফোরাম উল্লেখ করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সদস্য দেশগুলোকে আরো দৃঢ়তা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং করোনা পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন নতুন কৌশল প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিতে হবে।’
ড. মোমেন আরো বলেন, বাংলাদেশ বিমসটেকভুক্ত অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও উৎকর্ষে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এ লক্ষ্যে আসিয়ান ও সার্কের সদস্যভুক্ত সাতটি রাষ্ট্রের সমন্বয়ে গঠিত বিমসটেক ফোরামে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে ১৯৯৭ সালে যোগদান করে। তারপর থেকেই এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্য, কানেক্টিভিটি, কৃষি, সংস্কৃতি, মানুষে মানুষে যোগাযোগ প্রভৃতির উন্নয়নে অন্যান্য সদস্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশ একযোগে কাজ করে যাচ্ছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে পারস্পরিক উন্নয়ন এখনকার কূটনীতির মূলনীতি বলে বিবেচিত। বাংলাদেশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে, যিনি স্বাধীনতার অব্যবহিত পরেই এ অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সর্বপ্রথম আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছিলেন। তখন থেকেই আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়টি বাংলাদেশের সংবিধান ও কূটনীতির অপরিহার্য অংশ। এরই ধারাবাহিকতায় জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিভিন্ন আঞ্চলিক ফোরামে যুক্ত থেকে সম্মিলিত সহযোগিতার মাধ্যমে আঞ্চলিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করে চলছে। তাঁর নেতৃত্বে বাংলাদেশ বিমসটেক ফোরামে প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য হিসেবে যোগদান করে এ ফোরামের প্রতি বাংলাদেশের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বিমসটেক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বিমসটেক সচিবালয়।
ড. মোমেন বলেন, বিমসটেক ফোরামের ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়নের নেতৃত্বদানকারী দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সদস্য দেশগুলোর সঙ্গে যুগপৎভাবে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি কার্যকর মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ অগ্রসর ভূমিকা পালন করছে।’ একটি সম্ভাবনাময় ফোরাম হিসেবে বিমসটেক সম্মিলিত যোগাযোগের মাধ্যমে এ অঞ্চলে নতুন নতুন ব্যবসা ক্ষেত্রের সুযোগ অনুসন্ধান ও তার কার্যকর ব্যবহারে সচেষ্ট থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হানের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিমসটেকের মহাসচিব তেনজিন লেকফেল। অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি পার্মানেন্ট সেক্রেটারি চুতিনতর্ন স্যাম গংসাকদি, ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিসের (আরআইএস) মহাপরিচালক প্রফেসর শচীন চতুর্বেদী, ভুটানের ঊর্ধ্বতন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ ড. কিনলে দরজি ও বিমসটেকের সাবেক মহাসচিব সুমিথ নাকানদালা।