করোনাসন্দেহে হবিগঞ্জের যুবককে ভারতে পিটিয়ে হত্যা
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার এক যুবককে ভারতে পিটিয়ে হত্যা করেছে সেখানকার লোকজন। এ ঘটনায় উভয় দেশের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী-বিএসএফ ময়নাতদন্ত রিপোর্ট না দেওয়ায় লাশ গ্রহণ করেনি বিজিবি।
বিজিবি সূত্র জানায়, গত ২৪ মে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার মালঞ্চপুর গ্রামের আবদুল হাসিমের ছেলে লোকমান মিয়া মাধবপুরের সীমান্তবর্তী ভারতের মোহনপুর সীমান্ত দিয়ে গোপালপুরে ফুফুর বাড়িতে বেড়াতে যান। ভারতের স্থানীয় নাগরিকরা লোকমানকে করোনা রোগী ও চোর সন্দেহে পিটিয়ে সীমান্তে ফেলে দেয়। ভারতের সিদাই থানা পুলিশ লোকমানকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ব্যাপারে সিদাই থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হয়।
এ ঘটনা জানতে পেরে বিজিবি লাশ ফেরত চেয়ে বিএসএফকে চিঠি দেয়। চিঠির সাড়া দিয়ে গতকাল বুধবার বিকেলে মোহনপুর সীমান্তে পতাকা বৈঠক অনু্ষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন বিজিবির কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার দেলোয়ার হোসেন ও ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কোম্পানি কমান্ডার ইন্সপেক্টর শশী কান্ত।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বিজিবি ৫৫ হবিগঞ্জের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সামিউন্নবী চৌধুরী সামি জানান, বৈঠকে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে নিহত লোকমানের পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ও এ ঘটনায় থানায় দায়েরী মামলার এফআইআর চাওয়া হয়। বিএসএফ কোভিড-১৯ এর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ও মামলার এফআইআরের কপি দিলেও পোস্টমর্টেম রিপোর্ট দেয়নি। তাই বিজিবি লোকমানের লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়।
এ ব্যাপারে ৫৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিএসএফ মামলার যে এফআইআর দিয়েছে তাতে লোকমানের মৃত্যুর কারণ উল্লেখ নেই। এফআইআর বিধান অনুযায়ী লেখা হয়নি। তাছাড়া পোস্টমর্টেম রিপোর্ট পেলে লোকমানের মৃত্যুর কারণ জানা যেত।
নাসির উদ্দিন আরো জানান, লোকমানের কোভিড-১৯-এর নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তিনি জানান, লোকমানের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জেনে তাঁর লাশ আনতে সব রকম চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বিজিবি।