করোনায় ঢাবির ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আবদুল মতীনের মৃত্যু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) দর্শন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আবদুল মতীন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তিনি রাজধানীর উত্তরার শিন শিন জাপান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর। বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
অধ্যাপক ড. আবদুল মতীন স্ত্রী ও দুই ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর স্ত্রী হাসিনা মতীন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক। আবদুল মতীনকে তাঁর গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার ধিতপুরে দাফন করা হবে।
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন আবদুল মতীন। ১৯৬৮ সালে কানাডার ম্যানিটোবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং ১৯৬৯ সালে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘করেসপন্ডেন্স থিওরি অব ট্রুথ’ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
অধ্যাপক আবদুল মতীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। এক শোকবার্তায় উপাচার্য আখতারুজ্জামান মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
এ ছাড়া অধ্যাপক আবদুল মতীনের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন তাঁর সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা।
ড. আবদুল মতীন কমনওয়েলথ ফেলো হিসেবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট-ডক্টরাল গবেষণা সম্পন্ন করেন। তিনি এন আউটলাইন অব ফিলোসফি, যুক্তির আলোকে, প্রতীকী যুক্তিবিদ্যা, দর্শন সাহিত্য ও সংস্কৃতিসহ বেশকিছু মৌলিক গবেষণা গ্রন্থ এবং অনুবাদ গ্রন্থ রচনা করেন। ‘দুই পৃথিবী’ নামে তাঁর একটি কবিতার গ্রন্থও রয়েছে। এ ছাড়া দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত জার্নালে তাঁর বহু গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। তিনি ফিলোসফি অ্যান্ড প্রোগ্রেসসহ বেশকিছু জার্নাল সম্পাদনা করেছেন এবং উচ্চতর মানববিদ্যা ও গোবিন্দ দেব গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ও দর্শন বিভাগের চেয়ারম্যান পদেও দায়িত্ব পালন করেন।
ড. আবদুল মতীন ১৯৩৪ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে বিএ অনার্স ও ১৯৫৭ সালে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬০ সালের ১ জুলাই তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির দর্শন বিভাগের সিনিয়র লেকচারার হিসেবে যোগদান করেন এবং ২০০০ সালে অধ্যাপক হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।