কারাগারে বসে দল গোছায় ডাকাত দলের সর্দাররা : ডিবি
রাজধানী ঢাকার লালবাগসহ ঢাকার পাশের বিভিন্ন এলাকায় স্বর্ণের দোকান, বাস ও পণ্যবাহী ট্রাকে ডাকাতি করে আসছিল একটি চক্র। ডাকাতিকালে তারা ব্যবহার করত বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র। ঘটাত হত্যার মতো ঘটনা। এমনই এক ডাকাত দলের ১১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ। পুরান ঢাকার মিডফোর্ড এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেপ্তার হয় তারা। এরা নাকি কারাগারে বসেই দল গোছাত।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
ডাকাত প্রতিরোধে থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি সতর্ক আছে জানিয়ে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গোয়েন্দা পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যাওয়া ডাকাত সরদাররা সেখানেই নতুন করে দল গোছায়৷ তারা বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে নতুন নতুন সদস্যদের নিয়ে দল গড়ে আবারও ডাকাতি করছে। জেলে বসে বিভিন্ন অপরাধে বন্দিদের সঙ্গে কথা বলে। নানা প্রলোভন দেখায়৷’
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—সুমন চৌকিদার ওরফে সুমন মিয়া (৩৪), মো. মোস্তফা (৩২), মো. আরিফ হোসেন (৩৪), মো. পলাশ (৩২), মো. করিম (২৫), মো. হাসান (১৮), রিপন ওরফে আকাশ (২৪), জয়নাল আবেদিন (৩১), ওমর ফারুক ফয়সাল (২০), রাসেল (২৪) ও হাফিজুল ইসলাম (৩৩)।
অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের কাছ থেকে ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, দুই রাউন্ড গুলি, বড় ছোরা, রামদা, দুটি চাপাতি, পাটের রশি, গামছা এবং পাঁচটি সিএনজি ও একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করা হয়। এসব গাড়ি তারা বিভিন্ন সময় ডাকাতি করেছে বলে জানিয়েছে ডিবি।
হারুন অর রশীদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে একটি ডাকাত দল রাজধানীর লালবাগ, নারায়ণগঞ্জ, কেরাণীগঞ্জ, সাভার, গাজীপুর এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে স্বর্ণের দোকান, বাস ও ট্রাকে ডাকাতি করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি অভিযোগ আসে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে। পরবর্তী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ অভিযান চালিয়ে আজ বুধবার ভোরে পুরান ঢাকার মিডফোর্ড এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির সময়ে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গ্রেপ্তার চক্রের মূলহোতা সুমিন চৌকিদার ওরফে সুমন মিয়া ডাকাতি করতে গিয়ে একটি স্বর্ণের দোকানের কর্মচারীকে হত্যা করেছে। ডাকাত দলের প্রধান সুমনের বিরুদ্ধে হত্যা ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন থানায় ১৬টি মামলা ও পাঁচটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। পাশাপাশি গ্রেপ্তার দলের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাতি ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তাদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিস্তারিত পাওয়া যাবে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ডিএমপির কোতোয়ালি থানায় দুটি ডাকাতি মামলা করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয়।