কিশোরগঞ্জের যৌতুকের কারণে স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে যৌতুকের কারণে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অপরাধে স্বামী দেলোয়ার হোসেন মাহতাবকে (৪২) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুরে জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক মোহাম্মদ হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
প্রদত্ত রায়ে আসামিকে একই সঙ্গে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজাল রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দেলোয়ার হোসেন মাহতাব করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের উত্তর চান্দপুর গ্রামের বাসিন্দা। নিহত গৃহবধূর নাম প্রজ্ঞা মোস্তফা (২৬)। তিনি জেলার ইটনা উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের লাইমপাশা গ্রামের মো. আহসান মোস্তফার মেয়ে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২১ মার্চ হত্যাকাণ্ডের ঘটনার তিন মাস আগে তাদের একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। ঘটনার মাসখানেক আগে স্ত্রী প্রজ্ঞা মোস্তফার কাছে দেলোয়ার হোসেন মাহতাব ব্যবসা করার জন্য দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে এবং বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্বামী মাহতাব স্ত্রীর ওপর অত্যাচার ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলে আসছিল। এ পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালের ২১ মার্চ সকালে যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রী প্রজ্ঞার সঙ্গে মাহতাবের কথা কাটাকাটি ও ঝগড়ার এক পর্যায়ে মাহতাব ক্ষিপ্ত হয়ে প্রজ্ঞাকে ঘরের মধ্যে ফেলে ছোরা দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রজ্ঞা মারা গেলে তার মরদেহ ফেলে মাহতাব পালিয়ে যান।
পরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার হোসেন মাহতাবকে ওইদিনই আটক করে। এ ঘটনায় নিহত প্রজ্ঞা মোস্তফার পিতা মো. আহসান মোস্তফা বাদী হয়ে ওইদিনই করিমগঞ্জ থানায় দেলোয়ার হোসেন মাহতাবকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা করিমগঞ্জ থানার এসআই আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ২০১৯ সালের ২৯ জুলাই আদালতে দেলোয়ার হোসেন মাহতাবকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মিয়া মো. ফেরদৌস মামলাটি পরিচালনা করেন।