কুলিয়ারচরে নির্বাচনি সহিংসতায় আহত ব্যক্তির মৃত্যু
কিশোরগঞ্জর কুলিয়ারচরে নির্বাচনি সহিংসতায় মো. দেলোয়ার হোসেন নামের এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান।
নিহত দেলোয়ার উপজেলার পশ্চিম গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গোবরিয়া গ্রামের মো. ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় দেলোয়ারের ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন আহত হন। তিনি বর্তমানে বাজিতপুরের ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
পরিবারের দাবি, নির্বাচনের দিন দুপুরে স্থানীয় জাব্বাপাড়া ভোটকেন্দ্রে পুলিশের গুলিতে তারা আহত হয়েছিলেন। পরে তাদের উদ্ধার করে জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে আনোয়ারকে ভর্তি রেখে দেলোয়ারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠান চিকিৎসকরা। অবশেষে ঢাকার হেলথ কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেলোয়ার মারা যান।
এলাকাবাসী জানায়, ওই গুলির ঘটনায় একই এলাকার সাব্বির এবং রানা নামের আরও দুইজন আহত হয়েছিলেন। তারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
নিহত দেলোয়ারের বাবা ইব্রাহিম মিয়া জানান, তার ছেলেরা কেনো গণ্ডগোলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। নির্বাচনের দিন তারা ভোট দিতে কেন্দ্রে গিয়েছিল। পুলিশ গুলি করলে তার ছেলেরা আহত হন। তিনি তার ছেলেদের হতাহতের বিচার দাবি করেন।
সন্তানের কষ্টে বার বার মূর্ছা যাচ্ছিলেন দেলোয়ারের মা জোসনা বেগম। তিনি জানান, তার নিরপরাধ ছেলেদের ওপর পুলিশ ইচ্ছা করে গুলি ছুড়েছে। আহত দুই ছেলের মধ্যে এক ছেলে মারা গেছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ছেলে হত্যার বিচার চান।
দুই শিশু সন্তান নাজমুল (১১) ও এনামুলকে (৫) নিয়ে পাথরের মূর্তির মতো ঘরের এক কোণে বসেছিলেন দেলোয়ারের সদ্য বিধবা স্ত্রী খাদিজা বেগম। বার বার প্রশ্ন করা হলে তার মুখ থেকে কোনো কথা বের করা যায়নি। কয়েকবার শুধু ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়েছেন মাত্র। শিশুরাও যেন হতবিহ্বল এই আকস্মিক ঘটনায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, নির্বাচনের দিন নৌকা প্রতীক ও বিদ্রোহী প্রার্থীর কয়েকশ কর্মী-সমর্থক দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভোটকেন্দ্রের বাইরে জড়ো হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। তখন নিজেরা নিজেদের মধ্যে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছিল বলে শুনেছিলাম। পুলিশ সেদিন কোনো গুলি ছোড়েনি বলেও জানান তিনি।