কুষ্টিয়ায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন
কুষ্টিয়ায় চাঞ্চল্যকর সাব-রেজিস্ট্রার নুর মহম্মদ হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১-এর বিচারক তাজুল ইসলাম আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন কুমারখালী উপজেলার গট্টিয়া গ্রামের সাইদুল ইসলাম (৩৭), বানিয়াপাড়া গ্রামের মো. মশিউল আলম ওরফে বাবুল (৪০), খোকসা উপজেলার মঠপাড়া গ্রামের ফারুক হোসেন (৩৮) ও কুষ্টিয়া হাউজিং এস্টেটের বাসিন্দা কামাল হোসেন (৪০)।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া ব্যক্তি হলেন কুমারখালীর বানিয়াপাড়া গ্রামের মো. মনোয়ার হোসেন ওরফে ডাবলু।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের বাবুর আলী গেট নামক এলাকার বাসিন্দা হানিফ আলীর চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় ভাড়া বাসা থেকে হাত-পা বাঁধা এবং গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় সাব-রেজিস্ট্রার নুর মহম্মদকে উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক রাজিবুল হাসান তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহত নুর মহম্মদের ভাই কামরুজ্জামান শাহ বাদী হয়ে হত্যাকাণ্ডের পরদিন ৯ অক্টোবর অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। তদন্ত শেষে কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার কুন্ডু পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১৮ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানি শেষে পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে সাব-রেজিস্ট্রার নুর মহম্মদ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড এবং প্রত্যক্ষ সহযোগিতার দায়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশসহ অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এ রায় ঘোষণার সময় আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সরকারি দপ্তরে কর্মকর্তারা দপ্তর বহির্ভূত প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা হাসিল করতে নিজ সহকর্মীকে হত্যাকাণ্ডে প্রবৃত্ত হয়েছেন—এটা খুব দুঃখজনক।