ক্ষোভ থেকেই শিশু তানিশাকে হত্যা করা হয় : পুলিশ সুপার
ফেনীতে শিশু তানিশা ইসলাম তিশা হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার করেছে অভিযুক্ত কিশোর (১৪)। আজ শনিবার দুপুর নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার খোন্দকার নুরুন্নবী।
নিহত তানিশা ইসলাম তিশা (১১) ফেনী সদর উপজেলার কালিদহ ইউনিয়নের আলী ভুঞাবাড়ীর সৌদি প্রবাসী শহিদুল ইসলামের মেয়ে। অভিযুক্ত কিশোর সম্পর্কে তানিশার জ্যেষ্ঠাতো ভাই।
পুলিশ সুপার জানান, অভিযুক্ত কিশোরের বাবা জীবিত না থাকায় তানিশার পরিবার তাদের কথায় কথায় তুচ্ছতাচ্ছিল্য করত। এই আক্রোশের জেরে ক্ষোভে সে তানিশাকে হত্যা করে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে শিশু তানিশাকে বাসায় একা রেখে মা ও বোন পাশের বাড়িতে যান। সে সুযোগে পরিকল্পিতভাবে ওই কিশোর ঘরে ঢুকে এবং তানিশাকে হত্যার চেষ্টা করলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। এক পর্যায় তানিশাকে গলাটিপে হত্যার চেষ্টা করে। পরে তানিশা অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে টেনে হেঁচড়ে বাড়ির দোতলায় নিয়ে যায়। সেখানে সিলিংয়ের সঙ্গে শক্ত দড়ি বেঁধে ফেলে। কিন্তু এতেও ব্যর্থ হয় সে। এ সময় পাশে পড়েথাকা একটি ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে করে হত্যা নিশ্চিত করে। এর ঘণ্টাদেড়েক পর ঘরে তানিশাকে না পেয়ে তার মা ছাদের দিকে খুঁজতে গেলে মেয়ের গলাকাটা মরদেহ দেখতে পান।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এক পর্যায়ে খবর পেয়ে পুলিশের বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। এ সময় ঘরের ছাদ থেকে পাওয়া যায় একজোড়া স্যান্ডেল। সেই সূত্র ধরে তানিশার চাচাতো ভাই অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ওই কিশোরকে আটক করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি বাড়ির ছাদ থেকে জব্দ করে পুলিশ।
পরে নিহত তানিশার ভাই আশ্রাফুল ইসলাম হাসনাত বাদী হয়ে অভিযুক্ত কিশোরকে আসামি করে গতকাল শুক্রবার সকালে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। ওইদিন দুপুরে ওই কিশোরকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শরাফ উদ্দিনের আদালতে হাজির করলে সে আদালতে হত্যার দায় ম্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দেয়। পরে আদালতের নির্দেশনায় অভিযুক্তকে ঢাকায় কিশোর সংশোধনাগারে পাঠানোর হয়।