জল-স্থল-অন্তরীক্ষে টেলিকম খাতের অর্জন দৃশ্যমান : মোস্তাফা জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপান্তরের অভিযাত্রায় জল-স্থল-অন্তরীক্ষে দেশের টেলিকম খাতের অর্জন এখন ব্যাপকভাবে দৃশ্যমান। আরও অগ্রগতি চলমান। করোনাকালে দেশের মানুষের জীবনযাত্রা সচল রাখতে ডিজিটাল সংযুক্তি সহায়তায় বাংলাদেশ তার সক্ষমতার অভাবনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’
এ সময়ে বিটিসিএলের অনন্য ভূমিকার প্রশংসা করেন মন্ত্রী।
আজ সোমবার ঢাকায় বিটিসিএল সম্মেলন কক্ষে বিটিসিএল এবং বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্সের মধ্যে টেলিযোগাযোগ সেবা সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘সরকার ও দেশের জনগণ বিটিসিএল বা টেলিটকের কাছে আরও অনেক বেশি প্রত্যাশা করে।’
মন্ত্রী বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রাকে বিশ্বে অতীতে বাংলাদেশের মতো তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করা পশ্চাৎপদ দেশগুলোর জন্য অনুকরণীয় বলে উল্লেখ করেন।
এমনকি উক্ত দেশগুলোও বাংলাদেশ থেকেও শিক্ষা নিতে পারে বলেও মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
বিটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. রফিকুল মতিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. শাহজাহান মাহমুদ এবং বাংলালিংকের সিইও এরিক অ্যাস বক্তব্য দেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২০০৮ সালে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন রাজনীতিক শেখ হাসিনার ঘোষণাকে ডিজিটাল দুনিয়ায় একটি ঐতিহাসিক নজির উল্লেখ করে বলেন, ‘তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করা বাংলাদেশ ডিজিটাল হবে কেউ ভাবতে পারেনি। এ নিয়ে অনেকে বিদ্রুপ করেছে। পৃথিবীতে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণা লাভ করার বহু আগেই বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় অতীতের সব পশ্চাৎপদতা অতিক্রম করে বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ডিজিটাল পণ্য উৎপাদন, রপ্তানি ও সেবাতেও আজ বাংলাদেশ বিস্ময়কর সফলতা অর্জন করেছে।’
বেতবুনিয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আইটিইউ-এর সদস্য পদ লাভ এবং টিঅ্যান্ডটি বোর্ড গঠনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপন করে গেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তা চারা গাছে পরিণত করেছেন। গত ১২ বছরে তা বিরাট মহীরূহে রূপ নিয়েছে।’
কম্পিউটারে বাংলা ভাষার জনক মোস্তাফা জব্বার বিটিসিএল ও বাংলালিংকের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরকে ডিজিটাল বাংলাদেশ অগ্রগতির আরও একটি মাইলফলক বলে উল্লেখ করে বলেন, ‘ডিজিটাল সংযুক্তি ও সেবা সংক্রান্ত এই চুক্তি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় বিশেষ ভূমিকা রাখবে।’
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডিজিটাল মহাসড়ক গড়ে তুলতে মোবাইল অপারেটরসহ টেলিযোগাযোগ খাত সংশ্লিষ্টরা সবার ভূমিকার প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে যেকোনো সহযোগিতা দিতে সরকার বদ্ধপরিকর।’
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ অগ্রযাত্রায় বিটিসিএল বাংলালিংক চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিটিসিএল ইতোমধ্যে মোবাইল অপারেটর টেলিটক, গ্রামীণফোন ও রবিকে বিভন্ন টেলিকম সেবা দিয়ে আসছে।’
এনটিটিএন রিসোর্স শেয়ারিং, আইআইজি ব্যান্ডউডথ ও ডাটা কানেক্টিভিটির মাধ্যমে বিটিসিএল দেশের সমস্ত মোবাইল অপারেটর, সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং করপোরেট সেক্টরে মানসম্মত সেবা দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলালিংকের সঙ্গে এসব সেবা সংক্রান্ত এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হলো। বিটিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বাংলালিংক সিইও নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি মন্ত্রী প্রত্যক্ষ করেন।