টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২
টাঙ্গাইলের মধুপুরে যাত্রীবেশে ডাকাতি ও নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের মামলায় আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গাজীপুরের সোহাগপল্লী ও কালিয়াকৈরের সুত্রাপুরটান এলাকা থেকে আজ শুক্রবার সকালে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের মো. আউয়াল (৩০) ও কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ধনারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের নুরনবী (২৭)।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে রাজা মিয়া নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, গ্রেপ্তার হওয়া নুরনবীর কাছ থেকে লুট করা একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া লুট করা মালামাল উদ্ধারের জন্যে অভিযান চলছে। বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার হওয়া রাজা মিয়ার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে প্রথমে আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আউয়ালের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় নুরনবীকে। এখন তাঁদের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে অপর আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, টাঙ্গাইল ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাদিকুর রহমান জানান, মধুপুরের ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন কিনা, তা সোয়াপ পরীক্ষার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এর আগে পুলিশ সুপার জানিয়েছিলেন, গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কুষ্টিয়া থেকে একটি বাস অন্তত ২৪ জন যাত্রী নিয়ে নারায়ণগঞ্জের উদ্দেশে রওনা হয়। পরে রাত ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে খাবারের জন্য বিরতি দেওয়া হয়। সেখান থেকে পাঁচ মিনিট যাওয়ার পর মূল সড়ক থেকে প্রথমে তিন জন যাত্রী ওঠে। কিছু দূর যাওয়ার পর আরও চার জন যাত্রী ওঠে। নির্ধারিত স্টেশন ছাড়া কিছু দূর যাওয়ার পর আরও তিন জন যাত্রী সেজে বাসে ওঠে। আনুমানিক রাত ১২টার দিকে যাত্রীদের ঘুমানোর এক পর্যায়ে টাঙ্গাইলের নাটিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছালে ডাকাতদলের সদস্যেরা হঠাৎ করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পুরো বাসের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
টাঙ্গাইলের গোড়াই এলাকা থেকে বাসটিকে ঘুরিয়ে ডাকাতদলের সদস্যেরা কালিহাতী হয়ে মধুপুরে যায়। এরই মধ্যে তারা সবার হাত-মুখ ও চোখ বেঁধে জিম্মি করে। এরপর যাত্রীদের কাছে থাকা মোবাইল, টাকা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। পরে তারা গাড়িতে থাকা এক নারীকে ধর্ষণ করে। দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া জামে মসজিদের পাশে বালুর ঢিবির কাছে বাসের গতি থামিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতেরা।
এ ব্যাপারে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই বাসের যাত্রী বাদী হয়ে মধুপুর থানায় মামলাটি করেন।