ডাকাতরা নয়, ছেলেরাই কুপিয়ে হত্যা করে বাবাকে : পুলিশ সুপার
মুন্সীগঞ্জ সদরের মিঝিকান্দি ভাষানচর গ্রামে ডাকাতদের হামলায় নয় ছেলেরাই কুপিয়ে হত্যা করেছে বাবা নুরুল ইসলাম হাওলদারকে (৪৭)। মাকে মারধর করার ক্ষোভ মেটাতে বসতঘরের ভেতর তিন ছেলেসহ অজ্ঞাত পরিচয় আরও দু-তিন জন মিলে তাঁকে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে।
নিহত নুরুল ইসলাম ওই গ্রামের মৃত সুবেদ আলী হাওলাদারের ছেলে। আজ মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন।
পুলিশ সুপার জানান, রোববার দিনগত রাত ৩টার দিকে বসতভিটের পাশের দোচালা ঘরে ঘুমিয়ে থাকা বাবা নুরুল ইসলামকে তিন ছেলেসহ ও অজ্ঞাত পরিচয় আরও দু-তিন জন মিলে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন। এরপর হত্যাকাণ্ড ধামাচাপা দিতে গতকাল সোমবার সকালে বাবা নুরুল ইসলামকে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁরা। এ সময় সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে মেঘনা নদীতে ডাকাত দলের সদস্যরা হামলা চালিয়ে তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে বলে প্রচার চালান তাঁরা।
পুলিশ সুপার আরও জানান, এর আগে রোববার সকালে দাম্পত্য কলহের জের ধরে নুরুল ইসলাম তাঁর স্ত্রী তাছলিমা বেগমকে মারধর করেন। এতে আহত অবস্থায় স্ত্রী তাছলিমা শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুর এলাকায় তার মেয়ের বাড়িতে চলে যান। আর নুরুল ইসলাম নিজ বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। পরে ওই দিন বিকেলে বোন হামিদা বেগমের বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন নুরুল ইসলাম।
এদিকে, মাকে মারধর করায় ছেলে সুমন হাওলাদার (৩০), মোহাম্মদ আলী হাওলাদার (২৩) ও রাসেল হাওলাদারের (২০) মনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। পরে রাত গভীর হলে তিন ছেলে ও অজ্ঞাত আরও দু-তিন জন মিলে নুরুল ইসলামকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘ডাকাতদের হামলায় নিহত হওয়ার প্রচার চালালেও ভিন্ন তথ্য আসে পুলিশের কাছে। এতে গতকাল দুপুরে পুলিশ নিহত নুরুল ইসলামের দুই ছেলে সুমন হাওলাদার ও মোহাম্মদ আলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসে। অপর ছেলে রাসেল হাওলাদার পলাতক রয়েছেন।’
এ ঘটনায় সোমবার দিনগত রাতে নিহত নুরুল ইসলামের বোন হামিদা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। সেই মামলায় নিহত নুরুল ইসলামের ছেলে সুমন ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।