ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যুবদলনেতাকে কোপাল যুবলীগনেতা!
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি জিয়া সরদারকে (৪৫) ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে কুপিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে যুবলীগনেতার বিরুদ্ধে।
আজ মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। যুবদল সভাপতি জিয়া সরদার মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের আমঘাটা গ্রামের ইটবালু ব্যবসায়ী। তাঁকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে কুপিয়ে এবং পায়ে গুলি করে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যে যুবলীগনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শিপন পাটোয়ারী। তিনি তাঁর লোকজন নিয়ে এ ঘটনা ঘটান বলে অভিযোগ আহত যুবদলনেতার বড় ভাই বাবুল সরদারের।
গুরুতর আহত অবস্থায় জিয়া সরদারকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি একই ইউনিয়নের নোয়াদ্দা ঢালীকান্দি গ্রামের বিএনপিনেতা জেদ্দাল সরদারের ছেলে। অপরদিকে অভিযুক্ত যুবলীগনেতা শিপন পাটোয়ারী মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিপন হোসেন পাটোয়ারীর ছোট ভাই।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সেরজাবাদ গ্রামের ইটবালু বিক্রির প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে রওনা দেন ব্যবসায়ী জিয়া। পথিমধ্যে বেশনাল কালভার্টের সামনে পৌঁছালে যুবলীগনেতা শিপন পাটোয়ারীসহ ১০-১২ জনের একটি দল ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাঁকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। আমঘাটা গ্রামে নিয়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপায়। পরে পায়ে আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে রাস্তায় ফেলে রাখে। এরপর স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক শৈবাল বসাক জানান, ‘শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের একাধিক ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। একই সঙ্গে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাঁর পায়ে গুলি করা হতে পারে।’
সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ফরিদ জানান, ‘ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত। আহত ব্যবসায়ী গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুরে পুরাতন ফেরিঘাটে পুলিশের ওপর বিএনপিকর্মীদের হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার খাইরুল হাসান (সদর সার্কেল) বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা তথ্য পেয়েছি, ওই ব্যক্তিকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাঁকে মারধর করে তারা। ওই ব্যক্তির শরীরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর চিহ্ন মিলেছে। পায়ে থেঁতলানো অংশ কোপ হতে পারে আবার ছড়রা গুলিও হতে পারে।’
আহত ব্যবসায়ী জিয়া সরদারের বড় ভাই বাবুল সরদার বলেন, ‘আমার ভাই তার মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে গেলে পথিমধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারীর ছোট ভাই যুবলীগনেতা শিপন পাটোয়ারীসহ কয়েকজন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে কোপায় এবং পায়ে গুলি করে।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও যুবলীগনেতার বড় ভাই রিপন হোসেন পাটোয়ারী বলেন, ‘কে বা কারা কুপিয়েছে জানি না। তবে আমার ভাই এর সঙ্গে জড়িত না। তা ছাড়া যাকে কুপিয়েছে সে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি। সে মুক্তারপুর এলাকায় পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল।’