দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে মোমেন-ব্লিনকেনের বৈঠক আজ
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীর দিনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন আজ সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি জে ব্লিনকেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসবেন। শনিবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগের আগে ড. মোমেন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বৈঠকে আমরা আগামী ৫০ বছরে আমাদের (বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র) দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কীভাবে আরও জোরদার হবে, সে ব্যাপারে আলোচনা করব।’
একটি স্বাধীন দেশ হিসেবে অভ্যুদয়ের পর ওয়াশিংটনের সঙ্গে অর্ধশত বছরে একটি ভিন্ন ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ পুনর্বিন্যাস হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর দুদেশের মধ্যে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ হয়েছে। গত ১০ ডিসেম্বর র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও এলিট ফোর্সটির কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওয়াশিংটন নিষেধাজ্ঞা জারি করার পর, এই প্রথম বারের মতো ড. মোমেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন। ব্যাপক দ্বিপক্ষীয় ইস্যুর পাশাপাশি তিনি এ নিষেধাজ্ঞাটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি অনুরোধ জানাবেন।
ড. মোমেন আরও বলেন, ‘আমরা এ (নিষেধাজ্ঞা) ইস্যু উত্থাপন করব।’
যেহেতু র্যাব একটি দক্ষ, কার্যকর ও দুর্নীতিমুক্ত বাহিনী, তাই ড. মোমেন আশা করেন যে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এ নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ইতিবাচক সাড়া আসবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র বিরাজ করছে এবং এক দশকের বেশি সময় ধরে দেশ ব্যাপক অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু, কখনও কখনও আমাদের সফল ঘটনাগুলো বহির্বিশ্বে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করা হয় না। আমরা আমাদের সাফল্যের কথা বৈঠকে তুলে ধরব।’
ড. মোমেন জানান, আইনের শাসন নিশ্চিত করতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মামলায় দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি রাশেদ চৌধুরীকে হস্তান্তরের বিষয়টি নিয়েও আলোচনা করা হবে। রাশেদ চৌধুরী এখন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। বৈঠকে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের ব্যাপারেও আলোচনা করবেন। ওয়াশিংটন চায়, ঢাকা যেন দুটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। এ দুটি হলো—জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিএসওএমআইএ) ও অ্যাকুইজিশন ক্রস সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (এসিএসএ), যেগুলো দুদেশের মধ্যে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আরও বেশি কিছু করার প্রবেশদ্বার।
ঢাকা ওয়াশিংটনের সঙ্গে বহুমুখী বাণিজ্য বিস্তৃত করতে চায় উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, খাদ্য নিরাপত্তা, নীল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও প্রযুক্তি হস্তান্তরে সম্পৃক্ত থাকতে চায়, যা জনকল্যাণের সঙ্গে সম্পর্কিত। বাংলাদেশ তার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্কে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রেকে আমন্ত্রণ জানাবে।’