নিখোঁজ পল্লীচিকিৎসক হত্যার অভিযোগে শ্বশুর-পুত্রবধূ আটক
বরিশালের হিজলা উপজেলায় ছয় মাস আগে পল্লীচিকিৎসক নিখোঁজের রহস্য উদ্ধার করেছে পুলিশ। আটক হওয়া ব্যক্তিরা পরকীয়ার জেরে পল্লীচিকিৎসক মিলনকে হত্যার পর মরদেহ মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হত্যার শিকার পল্লীচিকিৎসক মিলন দপ্তরি (৩০) উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের ছয়গাঁও গ্রামের আবদুল খালেক দপ্তরির ছেলে।
হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশের কাছে জবানবন্দি দেওয়া ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের পূর্ব খাগেরচর গ্রামের আব্দুর রশিদ ঘরামী (৬৪) ও তার প্রবাসী ছেলের বউ রাহেলা বেগম (২৭)।
হিজলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইউনুস মিঞা জানান, আব্দুর রশিদ ঘরামী ও তার পুত্রবধূ রাহেলা হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
আসামিদের স্বীকারোক্তির উদ্ধৃতি দিয়ে ওসি জানান, পল্লী চিকিৎসক মিলনের সঙ্গে রাহেলা বেগমের পরকীয়া সম্পর্ক হয়। বিষয়টি তার শ্বশুর রশিদ ঘরামী জেনে ফেলেন। পরে তার মাধ্যমে চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে ফোন করে মিলনকে ঘরে আনেন রাহেলা। মিলন ঘরে প্রবেশের আগে থেকে আলমারির পেছনে লুকিয়ে থাকা আব্দুর রশিদ এসে মিলনের চোখে মরিচের গুঁড়া ছিটিয়ে দেন। এ সময় মিলন বিষয়টি ভালো করেননি বলে হুমকি দেন রশিদ ঘরামীকে। তখন রশিদ ঘরামী গাব গাছের লাঠি দিয়ে সজোরে মিলনের বুকে আঘাত করেন। এতে মিলন ঘরের মেঝেতে লুটিয়ে পড়েন। একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ ও তার পুত্রবধূ বুঝতে পারেন মিলনের মৃত্যু হয়েছে। তখন তারা মরদেহ গুমের পরিকল্পনা করেন। মরদেহের পা রশি দিয়ে বেঁধে টেনে বাড়ির সামনের খালে ফেলে দেন। পরে সেখান থেকে মরদেহটি টেনে নিয়ে মেঘনা নদীতে ভাসিয়ে দেন।
ওসি বলেন, এই ঘটনায় মিলনের ভাই সবুজ দপ্তরি গত ১ ফেব্রুয়ারি হিজলা থানায় নিখোঁজের সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। সেই জিডির তদন্ত করে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে মিলনের সর্বশেষ অবস্থান জানতে পেরে আব্দুর রশিদ ও তার পুত্রবধূ রাহেলাকে গতকাল সোমবার রাতে আটক করা হয়। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যার কথা স্বীকার করেন। তবে লাশের কোনো সন্ধান পাননি জানিয়ে ওসি বলেন, এ ঘটনায় ওই জিডির সূত্রে হত্যা মামলা করা হবে।