নেত্রকোনায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণাধীন ঘর ভাঙচুর, গ্রেপ্তার ২
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের গ্রামের পাশে মাঠে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণাধীন ঘর ভাঙচুর ও পাহারাদারদের মারপিট করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী কাজী মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় বলাইশিমুল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর তালুকদার মল্লিক ও সাবেক মেম্বার হায়দার আহমেদ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার নেত্রকোনা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বলাইশিমুল খেলার মাঠে প্রধানমন্ত্রী উপহার হিসেবে যাদের ঘর নেই জায়গাও নেই, সেই ভূমি ও গৃহহীন ২৫টি পরিবারের জন্য নির্মাণাধীন ঘর ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এসময় পাহারাদার হিসেবে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা থাকলেও তাদের মারপিট করা হয়।
খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম ও কেন্দুয়া থানার ওসি মো. আলী হোসেন পিপিএম। এদিকে গভীর রাতে পুলিশ আলী আকবর তালুকদার মল্লিক ও হায়দার আহমেদ তালুকদারকে গ্রেপ্তার করে।
জানা যায়, বলাইশিমুল গ্রামের হাওড়ে ১ একর ৮০ শতাংশ ভূমিতে একটি পুরোনো খেলার মাঠ। ওই মাঠে একাংশের ৫০ শতাংশ ভূমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পভুক্ত ২৫টি আধাপাকা ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন। এ খবর শুনে এলাকাবাসী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর মাঠে নির্মাণ না করার দাবিতে গত ২৮ মে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পরদিন ২৯মে খেলার মাঠে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বৈঠক হয়। বৈঠকে খেলার মাঠ ঠিক রেখে মাঠের একাংশে ঘর নির্মাণের সিদ্ধান্ত হলেও বলাইশিমুল গ্রামের হাবিবুর রহমান মণ্ডল বাদী হয়ে ৩০ মে ইউএনওসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় আদালত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ৫ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাও নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশ দেন।
৩ জুন শুক্রবার দুপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের নির্মাণাধীন ঘর ভাঙচুরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নেত্রকোনা-৩ আসনের এমপি অসীম কুমার উকিল ও নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস। তারা আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজে বাধা, ভাঙচুর ও পাহারাদারদের মারপিটের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। সেই সঙ্গে দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানার ওসি মো. আলী হোসেন পিপিএম বলেন, এ ঘটনায় এজাহারে ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১৫-২০ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে নেত্রকোনার আদালতে পাঠানো হয়েছে।