পদ্মা সেতুতে বসলো রেললাইনের সর্বশেষ স্লিপার
সড়কপথের পর এবার স্বপ্নের পদ্মা সেতুর রেললাইনের কাজ শেষের পথে। গতকাল মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) রাতে সেতুতে বসানো হয়েছে সর্বশেষ স্লিপার। এখন শুধু সাত মিটার অংশের ঢালাই কাজ বাকি। ঢালাই শেষ হলে সম্পূর্ণ হবে ছয় দশমিক ৬৮ কি.মি. রেললাইনের কাজ।
মঙ্গলবার রাত ১০টায় সেতুর মাঝামাঝি পাঁচ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টে ইস্পাতের স্লিপারটি বসানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ।
প্রকৌশলী সূত্রে জানা গেছে, স্লিপারটি চীন থেকে উড়োজাহাজে করে আনা হয় বাংলাদেশে। সোমবার সন্ধ্যায় স্লিপারটি রাজধানী হযরত শাহ-জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর, মঙ্গলবার সেটি পদ্মা সেতু প্রকল্পের সাইটে নিয়ে আসা হয়। স্লিপারটি বসানোর সঙ্গে সাত মিটার কংক্রিটিং হবে। সেটি শক্ত হতে ৪৮ঘন্টা সময় লাগে। এরপর ট্রেন চলাচলের উপযোগী হবে লাইনটি।
প্রকৌশলীরা জানান, ছয় দশমিক ১৫ কিলোমিটার মূল সেতু, ও দুইপাশের ভায়াডাক্ট সেতু মিলিয়ে পদ্মা রেল সেতুর দৈর্ঘ্য ছয় দশিক ৬৮ কিলোমিটার। রেলসেতুতে আটটি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। দেশে প্রথমবারের মতো সর্ববৃহৎ রেলব্রিজ মুভমেন্ট জয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে পদ্মা রেল সেতুতে। দ্রুত গতিতে রেল চলার সময় এই মুভমেন্ট জয়েন্ট আটশ মিলিমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারবে। মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের আটটি স্লিপার ছাড়া বাকি সবগুলো কংক্রিটের তৈরি। এগুলো ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরোনো রেলস্টেশনের পাশে স্থাপিত কারখানায় তৈরি করেছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। তবে, বিশেষ তাপমাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে।
এদিকে, রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত পুরো প্রকল্পের মধ্যে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচতলায় পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। এখন তা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে রয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কনস্ট্রাকশন সুপারভিশন কনসালটেন্টের (সিএসসি) তত্ত্বাবধানে চলছে পদ্মা সেতুর এই রেলসংযোগ প্রকল্পের কাজ। পদ্মা সেতু ছাড়াও প্রকল্পের মোট ১৭২ কিলোমিটার লেভেল ক্রসিংবিহীন রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেলসেতুর কাজ শেষ হয়েছে। সেতুর দুই পাসের স্টেশন নির্মাণ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।