পদ্মা সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক : প্রধানমন্ত্রী
স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণে বাধা দিতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমাদের অনেক অপবাদ সহ্য করতে হয়েছে। এ সেতু আমাদের সক্ষমতার প্রতীক।’
আজ শনিবার মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সড়ক পরিহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব ড. খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নয় মাস মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে আমরা এ স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। জাতির পিতা যুদ্ধ করে আমাদের বিজয় এনে দিয়েছেন। অত্যন্ত বেদনার সঙ্গে বলতে হচ্ছে—১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। সঙ্গে আমার মা, তিন ভাই ও দুই ভাইয়ের স্ত্রীকে হত্যা করা হয়। বিদেশ থাকায় আমরা দুই বোন বেঁচে যাই।’
পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজের সঙ্গে নিয়োজিত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এ সেতু নির্মাণে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের কারণে আমরা দুই বছর পিছিয়ে পড়েছি। কিন্তু, আমরা হতোদ্যম হইনি। জাতির পিতা বলেছিলেন—কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। আমরা সেই মন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে কাজ করছি। আমরা তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলব।’
২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সেতুর নির্মাণ কাজে ৩৭ এবং ৩৮ নম্বর পিলারে প্রথম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে পদ্মা সেতুর অংশ দৃশ্যমান হয়।
পরে একের পর এক ৪২টি পিলারের ওপর বসানো হয় ৪১টি স্প্যান। ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর শেষ ৪১তম স্প্যান স্থাপনের মাধ্যমে বহুমুখী ৬.১৫ কিলোমিটার পদ্মা সেতুর সম্পূর্ণ কাঠামো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, মূল সেতু নির্মাণের কাজটি করেছে চীনের ঠিকাদার কোম্পানি চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) এবং নদী শাসন করেছে চীনের সিনো হাইড্রো কর্পোরেশন। মোট ৩০,১৯৩৩.৭ কোটি টাকা ব্যয়ে স্ব-অর্থায়নে সেতু প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।
মূল সেতু নির্মাণের ব্যয় ১২,১৩৩.৩৯ কোটি টাকা (৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন টাওয়ার এবং গ্যাস লাইনের জন্য ১০০০ কোটি টাকাসহ) এবং ১৩.৮ কিলোমিটার নদী শাসন কাজের ব্যয় ৯,৪০০০.০ কোটি টাকা।
টোল প্লাজা এবং এসএ-২ সহ ১২ কিমি অ্যাপ্রোচ রোডের নির্মাণ ব্যয় ১,৯০৭.৬৮ কোটি টাকা (২টি টোল প্লাজা, ২টি থানা ভবন এবং ৩টি পরিষেবা এলাকাসহ) যেখানে পুনর্বাসনের ব্যয় ১,৫১৫.০০ কোটি টাকা, ২৬৯৩.২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় ব্যয় ১২৯০.৩ কোটি টাকা, কনসালটেন্সি ৬৭৮৩.৭ কোটি টাকা এবং অন্যান্য (বেতন, পরিবহণ, সিডি ভ্যাট এবং ট্যাক্স, ফিজিক্যাল এবং প্রাইস কন্টিনজেন্সি, ইন্টারেস্ট ইত্যাদি) ১,৭৩১.১৭ টাকা।