পরকীয়ায় নিজ মেয়েকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার মা
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে পরকীয়ার কারণে মাইশা আক্তার (১৬) নামের এক মাদ্রাসাছাত্রী হত্যায় জড়িত সন্দেহে তার মা স্বপ্না আক্তারকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার দেহুন্দা ইউনিয়নের চর দেহুন্দা গ্রামের বাড়ি থেকে কিশোরী মাইশার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত মাইশা আক্তার চর দেহুন্দা গ্রামের বাবুল মিয়ার মেয়ে ও স্থানীয় একটি কওমি মাদরাসার আবাসিক ছাত্রী।
করিমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামছুল আলম সিদ্দিকী জানান, আজ সন্ধ্যায় এ ঘটনায় মাইশার বাবা বাবুল মিয়া বাদী হয়ে স্বপ্না আক্তার ও তার কথিত প্রেমিক ফাইজুলকে (৩০) আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন। স্বপ্না বেগমের স্বামী বাবুল মিয়া (৫৫) ঢাকার তেজগাঁওয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত।
ওসি জানান, পুলিশ নিবিড়ভাবে ঘটনার তদন্ত করছে এবং পলাতক ফাইজুলকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, স্বপ্না বেগমের সঙ্গে তার খালাতো ভাই ফাইজুলের (৩০) পরকীয়ার সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়ানোয় মা স্বপ্না বেগম ও পরকীয়া প্রেমিক ফাইজুল দুজনে মিলে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে এক মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র ছেলে বাবা বাবুল মিয়ার সঙ্গে ঢাকায় থাকে। এছাড়া মাইশা মাদ্রাসা থাকে। ফলে স্বপ্না বেগম বাড়িতে একা থাকতেন। এ সুযোগে খালাতো ভাই ফাইজুলের সঙ্গে স্বপ্না বেগমের পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ফাইজুলের সঙ্গে স্বপ্না বেগমের পরকীয়ার সম্পর্ক এলাকায় জানাজানি হলে এ নিয়ে বেশ কয়েকবার দেন-দরবারও হয়েছে। ফাইজুল উপজেলার সুতারপাড়া ইউনিয়নের উত্তর গনেশপুর গ্রামের বাসিন্দা।
গতকাল রাতে মা স্বপ্না আক্তার ও পরকীয়া প্রেমিক ফাইজুল মিলে মাইশাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনার পর পরই মোটরসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যায় ফাইজুল। আজ সকালে ঘরে মাইশার নিথর দেহ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাইশার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায় এবং স্বপ্না বেগমকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। সেইসঙ্গে ফাইজুলের মোটরসাইকেলটিকে পুলিশ জব্দ করেছে।