পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ‘ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স’ এর সভাপতিত্ব গ্রহণ
আসন্ন দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বুধবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স- এর ১৯-তম সভা আয়োজন করে। সভায় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মেভলুত চাভুসৌলু বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স-এর সভাপতির পদ হস্তান্তর করেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সভায় সভাপতিত্ব করেন এবং ডি-৮ ভূক্ত দেশসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা অংশগ্রহণ করেন।
সভার শুরুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স-এর সভাপতি হিসেবে তাঁর মেয়াদ সফলভাবে সমাপ্ত করার জন্য অভিনন্দন জানান। এ ছাড়া তিনি ডি-৮-কে আরও সচল ও বেগবান করার লক্ষ্যে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ডি-৮ মহাসচিবকে ধন্যবাদ জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ১৯৯৯-২০০১ মেয়াদে সফলভাবে ডি-৮ এর সভাপতিত্বের দায়িত্ব সম্পন্ন করে এবং দুই দশক পর দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বারের মতো ডি-৮ এর সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করবে।
ড. মোমেন আরও উল্লেখ করেন, জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের সন্ধিক্ষণে বাংলাদেশ এলডিসি গ্রুপ থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা সফলভাবে পূরণ করেছে। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তে ডি-৮ এর সভাপতিত্ব লাভ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত আনন্দের।
ডি-৮ দেশসমূহের মধ্যে সম্মিলিত জনসংখ্যার ১৯ শতাংশই তরুণ উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে যুব সমাজের অফুরন্ত সম্ভাবনা আবিষ্কারের গুরুত্ব অনুধাবন করে বাংলাদেশ দশম ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘পার্টনারশিপ ফর এ ট্রান্সফরমেটিভ ওয়ার্ল্ড : হার্নেসিং দ্য পাওয়ার অব ইয়থ অ্যান্ড টেকনোলোজি’ নির্ধারণ করেছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুব সমাজকে সহায়তা করার জন্য ড. মোমেন ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আহ্বান জানান। যেহেতু ডিজিটাল যুগে টেকনোলোজি এবং উদ্ভাবনী দক্ষতাসম্পন্ন কর্মী প্রয়োজন, সেহেতু, এ সম্ভাবনাময় তরুণ সমাজকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে তাদেরকে সহায়তার লক্ষ্যে ডি-৮ উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী করোনাভাইরাস মহামারি প্রতিরোধে এবং এর অর্থনৈতিক নেতিবাচক প্রভাব থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহের কথা তুলে ধরেন। কোভিডের কারণে সৃষ্ট এ অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে তিনি ডি-৮ সদস্য রাষ্ট্রের নাগরিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য ‘ডি-৮ ডিজিটাল মার্কেট প্লেস’ এবং সবার জন্য প্রযোজ্য একটি সহনশীল মহামারি পরবর্তী সহযোগিতার মডেল প্রস্তুত করা যেতে পারে মর্মে উল্লেখ করেন।
এ ছাড়া, বিশ্ব অর্থনীতির ওপর কোভিড-১৯ এর নেতিবাচক প্রভাব দূরীকরণের জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডি-৮ দেশসমূহের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ পণ্যের পাশাপাশি সেবা ক্ষেত্রেও মুক্ত এবং ন্যায়সঙ্গত প্রবেশের অধিকারে বিশ্বাস করে।
সভায় অন্যান্য ডি-৮ ভূক্ত দেশসমূহের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরাও বক্তব্য দেন এবং ডি-৮ মহাসচিব ২০১৯ হতে আজ পর্যন্ত ডি-৮ এর কার্যক্রমসমূহ তুলে ধরেন। তাঁরা ডি-৮ সচিবালয়ের নেওয়া পদক্ষেপ কাউন্সিলে পর্যালোচনা করেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ ২০২২ সালের প্রথমার্ধে ঢাকায় পরবর্তী ডি-৮ কাউন্সিল অব মিনিস্টার্স সভা আয়োজন করবে বলে আশা করছে।