ফেনীর দুই নদীর ৯ পয়েন্টে ভাঙন, ১৮ গ্রাম প্লাবিত
পাহাড়ি পানির ঢলে ফেনীর পরশুরাম ও ফুলগাজীর মুহুরী ও কহুয়া নদীর বাঁধের ৯টি পয়েন্টে ভাঙর দেখা দিয়েছে। এতে ১৮টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পরশুরামের উপসহকারী প্রকৌশলী আরিফুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ফুলগাজী উপজেলার মুহুরী নদীর বাঁধের ফুলগাজী বাজার সংলগ্ন একটি, উত্তর দৌলতপুর একটি, গবতলা একটি, দূগাপুর একটি, রামপুর এলাকায় একটি ও ঘনিয়া মোড়া একটিসহ ছয়টি পয়েন্ট ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পাউবোর ওই কর্মকর্তা আরো জানান, এছাড়া পরশুরামে মুহুরী নদীর বাঁধের পরশুরামে একটি, চিথলিয়ায় একটিও পরশুরামের কহুয়া নদীর বাঁধের দুটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ কারণে ফুলগাজীর ৯টি ও পরশুরামের ৯টিসহ ১৮টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
গ্রামগুলো হচ্ছে ধনিকুণ্ডা, উত্তর দৌলতপুর, চিথলিয়া, দূর্গাপুর, রামপুর, ঘনিয়ামোড়া, সাহেবনগর, সালধর, মির্জানগর, ফুলগাজী, রাজশপুর ও চন্দনা।
আজ মঙ্গলবার সকাল ৬টায় মুহুরী নদীর পানি পরশুরাম পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৮ সেন্টি মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পরশুরাম উপজেলা চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন বলেন, ‘বন্যার পানিতে ফসলি জমির পাশাপাশি মৎস্য খামারের ৬০ থেকে ৭০টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। অনেক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল আলিম বলেন, ‘ফুলগাজী বক্সমাহমুদ সড়কে বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। ফুলগাজী ও পরশুরামবাসী ত্রাণ বা সরকারি সাহায্য চায় না। তারা ভালোভাবে নদী খনন ও বাঁধ নির্মাণ চায়।’
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান বলেন, ‘বর্ষার পিক আওয়ারে ভারতীয় ঢলের পানি মুহুরী নদী দিয়ে সাগরে যায়, ফলে পানির তীব্রতা বেড়ে যায়। মুহুরী ও কহুয়া আগে সত্যিকারে নদী ছিল। বর্তমানে নদীগুলি সংকোচিত হয়ে গেছে। নদীগুলি এখন পানি ধারণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। গত দুই বছরে এ এলাকায় সাতবার বন্যা হয়েছে। শুকনো সময়ে বাঁধের মাটি শক্ত থাকলেও বর্ষায় তা নরম হয়ে যায়। এতে করে পানির চাপ ধারণ ক্ষমতার বাইরে যাওয়ায় বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও ভাঙন দেখা দেয়। এতে এলাকার মানুষ বন্যকবলিত হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রাথমিকভাবে দেড়শ মেট্রিক টন চাল ও দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ইউএনওরা ক্ষতিগ্রস্তদের তালিখা করে তা আমাদের দিবে।’
এছাড়া জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্তদের শুকরা খাবার দেওয়ার জন্য ইউএনওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
করোনার কারণে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোর কাজ না থাকায় তাদের জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে বলে জানায় স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা।
এদিকে, আসন্ন কোরবানি ঈদের জন্য স্থানীয়ভাবে যারা গরু পালন করেছে তারা বিপাকে পড়েছে। বন্যার পানির কারণে গরু রাখা ও দেখভাল করা তাদের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।