বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের তথ্য দিলে পুরস্কার : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক তিন আসামির বিষয়ে সঠিক তথ্য দিতে পারলে তথ্যদাতাকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক পাঁচ খুনির মধ্যে এ এম রাশেদ চৌধুরী ও এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী ছাড়া বাকি তিনজনের অবস্থানের ব্যাপারে সরকারের কাছে কোনো তথ্য নেই। এই তিন খুনির ব্যাপারে সঠিক তথ্য দিতে পারলে পুরস্কার দেওয়া হবে।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বঙ্গববন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ড. মোমেন বলেন, রাশেদ চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরিয়ে আনতে নানামুখী চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ বিষয়ে বেশ অগ্রগতি রয়েছে। কানাডায় আশ্রয় নেওয়া নূর চৌধুরীর বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সেখানে জনমত গঠনের চেষ্টা চলছে। কানাডার বিশেষ আইন আছে যে, তারা কোনো মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে ফিরিয়ে দেয় না। আমরা অনুরোধ করব, নূর চৌধুরীকে ফিরিয়ে দিতে। আর রাশেদ চৌধুরীর নথি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। তাকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোররাতে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য ধানমন্ডির বাসভবনে সপরিবারে হত্যা করে স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এদিন ঘাতকেরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছে পরিবারের ১৭ জনসহ ২০ জন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ছয় আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলেও এখনও পলাতক রয়েছে পাঁচজন।
ইতিহাসের বর্বরোচিত এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে এ পর্যন্ত ছয়জনকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থান এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার। এ তিনজন হলো—খন্দকার আবদুর রশিদ, শরিফুল হক ডালিম ও মোসলেহ উদ্দিন। এস এইচ এম বি নূর চৌধুরী কানাডায় ও এ এম রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আরেক আসামি আজিজ পাশা ২০০২ সালে পলাতক অবস্থায় জিম্বাবুয়েতে মারা যায়।
২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি রাতে আসামি সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান ও মহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালের ১২ এপ্রিল শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত খুনি ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।